এর মধ্যে ১৫ কোটি ডলার স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং বাকি অর্থ গৃহ নির্মাণ ও অবকাঠামো সুবিধা দিতে ব্যয় করা হবে।
বহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ব্যাংক ও সরকারের মধ্যে এ সংক্রান্ত দুটি চুক্তি হয়। ইআরডির অতিরিক্ত সচিব কাজী সফিকুল আযম এবং বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি জাহিদ হোসেন চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্বাস্থ্য খাত উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এ অর্থায়ন জাতিসংঘ ঘোষিত উন্নয়ন এজেন্ডা এবং সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত করবে।
প্রকল্পের মাধ্যমে বস্তিতে বসবাকারী নিম্ন আয়ের লোকদের বাড়ি নির্মাণে ১০ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
বিশ্ব ব্যাংকের মতে, গর্ববতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং যক্ষ্মা প্রতিরোধের মধ্যেমে স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এ অতিরিক্ত অর্থ সরকারকে শক্তি জোগাবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্য তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা হবে। এর আওতায় বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অভিযোগের সমাধান দেওয়া হবে।
নতুন এ অর্থায়নসহ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিশ্ব সংস্থাটির সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
প্রকল্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহ, ড্রেনেজ, বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবকাঠামো উন্নয়নও করা হবে।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথম দিকে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ এবং সিরাজগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষরা এ সুবিধা পাবে।
পরবর্তীতে ঢাক ও চট্টগ্রামের মতো শহরের বস্তিবাসীদেরও এর আওতায় আনা হবে।
প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এ রমধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৫ কোটি ডলার। বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ।
ছয় বছরের রেয়াতকালসহ মোট ৩৮ বছরে দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে এ ঋণ শোধ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রকল্প দুটি সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি জাহিদ বলেন, “বাংলাদেশে নগর বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু নগর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন হয়নি। নগরগুলো দরিদ্র মানুষের আবাসন বড় সমস্যা।”
বস্তিতে বাসকরা নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা অনেক- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব নিম্ন আয়ের মানুষকে বাড়ি নির্মাণে ঋণ দেওয়া হবে। বস্তিবাসীর জন্য রাস্ত নির্মাণ, পানির ব্যবস্থাসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ সুবিধা পাবে।
জাহিদ হোসন বলেন, মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংক ১৯৯৮ সাল থেকে বড় আকারে সহায়তা দিয়ে আসছে। এ ধারবাহিকতায় বিশ্ব ব্যাংকের এ সহায়তা মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সরকারের জন্য সহায়ক হবে।
ইআরডির অতিরিক্ত সচিব সফিকুল বলেন, এ দুই চুক্তির মধ্য দিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি হল। ‘শিগগিরই’ আরও ১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি হবে।