রেল যাবে পদ্মার ওপারে, প্রকল্পে সায়

পদ্মাসেতুতে রেল লাইন স্থাপনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলপথে যুক্ত করতে একটি প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2016, 01:53 PM
Updated : 3 May 2016, 02:05 PM

প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০ বছর মেয়াদে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে চীন, যার জন্য সুদ গুণতে হবে ২ শতাংশ হারে।

বাকি ১০ হাজার ২৪০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল যোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে আরও আটটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘পদ্মাসেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগ্যাজ রেল লাইন নির্মাণ করা হবে।

“চলতি বছরের জুন মাস থেকে শুরু করে প্রকল্পটি ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুর পর্যন্ত অংশের কাজ ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ করা হবে। ওই বছর পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচলের পাশাপাশি রেল চলাচলও শুরু হবে।”

বাংলদেশই রেলওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বলে জানান মন্ত্রী।

১৭২ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণে বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “এ প্রকল্পটির জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের অধিকৃত কোনও জমি নেই। সম্পূর্ণ নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। তাই প্রকল্পের ব্যয় বেশি ধরতে হয়েছে।”

“জমির দামের দিক দিয়ে টোকিও, নিউ ইয়র্ক ও মুম্বাইয়ের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান,” যোগ করেন মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী জানান, মঙ্গলবারের বৈঠকে ৪৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট নয় প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

এরমধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৫২ কোটি টাকা এবং বাকি ১৯ হাজার ২৬৬ কোটি টাকার যোগান দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।

মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো, ‘ঢাকা খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি ইন্টারসেকশন থেকে (ইকুরিয়া-বাবুবাজার লিংক সড়কসহ) মাওয়া পর্যন্ত এবং পাচ্চর-ভাংগা অংশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চার লেনে উন্নয়ন’ প্রকল্প।

এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।

প্রায় ৯২ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘জাতীয় মহাসড়ক এন-৭ এর মাগুরা শহর অংশের রামনগর মোড় হতে আবালপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্প।

এক হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ণ প্রকল্প, সিলেট বিভাগ’।

৫৩৩ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘উপকূলীয় ও ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (২য় পর্যায়)’।

৭৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ’ প্রকল্প।

৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘উদ্যানতাত্বিক ফসলের গবেষণা জোরদারকরণ এবং চর এলাকায় উদ্যান ও মাঠ ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার’ প্রকল্প।

১৮৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘বাংলাদেশ বেতারের মহাশক্তি প্রেরণ কেন্দ্র ১০০০ কিলোওয়াট মধ্যম তরঙ্গ ট্রান্সমিটার’ প্রকল্প।