রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
Published : 27 Apr 2016, 10:40 PM
বুধবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আমাদের অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে, উন্নয়নপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষ যেভাবে জ্বালাও পোড়াওয়ের নেতিবাচক রাজনীতি প্রত্যাখান করেছে, তা জনগণের জীবনবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গীর ইতিবাচক পরিবর্তনেরই পরিচায়ক।
“রাজনৈতিক মহলের শুভবুদ্ধি আর জনগণের এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী আমাদের অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি।”
‘বাজেট ২০১৫-১৬: দ্বিতীয় প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক প্রতিবদনটি সন্ধ্যায় উপস্থাপন করেন মন্ত্রী।
প্রতিবেদনে মন্ত্রী বলেন, “অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতার পথ ধরে অনেক সম্ভাবনা নিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের যে সূচনা হয়েছিল, আশার কথা, আমরা সেই সম্ভাবনা থেকে এতোটুকু বিচ্যুত হইনি।”
“চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য সূচকসমূহের ইতিবাচক অবস্থা, বিশেষ করে রপ্তানি আয়, বৈদেশিক বিনিয়োগ, কর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঊর্ধ্বগতি এবং মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতা আমাদের এই বার্তাই দেয় যে, উন্নয়নের মহাসড়কে আমাদের যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত।”
বাধা থাকা সত্বেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের পথে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার নানা দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মুহিত বলেন, “কখনও বাধা আসে স্বার্থান্বেষী কুচক্রীদের নিকট থেকে, কখনো উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে। কিন্তু এ দেশের সংগ্রামী জনগোষ্ঠীর সহজাত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া।”
নিজেকে ‘অত্যন্ত আশাবাদী’ মানুষ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি সবসময়ই এমন এক বাংলাদেশের কথা তুলে ধরতে চাই, যা হবে সত্যিকারভাবেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা।”
স্বপ্নকে শুধু কথামালার মধ্যে আবদ্ধ না রেখে ক্রমান্বয়ে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথাও তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।
উন্নয়নের পক্ষে তথ্য উপস্থাপন করে মুহিত বলেন, “গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৫৫ শতাংশ, যা সমতুল্য দেশগুলোর একই সময়ের প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি।
“চলতি অর্থবছরে আমরা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম ৭ শতাংশ। এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ সকলেই প্রক্ষেপণ করেছে যে প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৭ শতাংশ। আইএমএফ বলেছে তা হবে ৬.৮ শতাংশ।
“পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাথমিক প্রতিবেদনে আমরা নিশ্চিত যে এবার আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হবে।”