ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠন

এনজিও, কোম্পানি ও সরকারি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর আর্থিক হিসাবের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2016, 07:17 PM
Updated : 24 April 2016, 07:17 PM

রোববার প্রকাশিত এ সংক্রান্ত গেজেটে বলা হয়েছে, “ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ এর ৩ এর উপধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার এতদদ্বারা ‘ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল’ নামে একটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করিল।”

আইন অনুসারে এই কাউন্সিল হবে ১২ সদস্যের এবং এর চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবে সরকার।

২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ পাস হয়। যাতে এনজিও, কোম্পানি ও সরকারি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর আর্থিক হিসাবের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল- এফআরসি প্রতিষ্ঠার বিধান রাখা হয়।

আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনটি পাস হওয়ায় কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি নিরীক্ষা সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যাবে। এ আইনের অধীনে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠন হবে।

আইন অনুযায়ী ১২ সদস্যের এফআরসি গঠন হবে। এ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবে সরকার। অন্যদের মধ্যে আইসিএবি ও আইসিএমএবি সভাপতিকে এর সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

কাউন্সিল মূলত হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা পেশার নীতি ও নৈতিকতা সম্পর্কিত মান ইত্যাদি নির্ধারণ করবে।

এছাড়া হিসাব নিরীক্ষা সেবার গুণগত মান উন্নয়ন, তালিকাভুক্ত নিরীক্ষকদের হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা কাজের সর্বোচ্চমান নিশ্চিতকরণ, আর্থিক প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষার পেশাগত কার্যক্রমের সততা, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আর্থিক ও অন্যান্য তথ্যের উচ্চ মানসম্পন্ন প্রতিবেদন প্রস্তুতে উদ্বুদ্ধ করবে এই কাউন্সিল।

আইনে আরও বলা হয়েছে, এফআরসি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন হিসাব ও নিরীক্ষা মান অনুসরণ করে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন’ ও বাস্তবায়ন করবে। হিসাব ও নিরীক্ষা সেবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন চার্জ এবং ফিও নির্ধারণ করবে এফআরসি।

আইন অনুযায়ী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এফআরসিতে তালিকাভুক্ত হতে হবে। অন্যথায় নিরীক্ষকরা জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট সংস্থার নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এফআরসি নিরীক্ষা সনদ দেবে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এফআরসির সব শর্ত পরিপালন করতে হবে।

আইনে এফআরসিকে নিরীক্ষকদের অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে জেল ও জরিমানার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে।

আইনের ৪৮ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এ আইনের বা তদধীন প্রণীত বিধি প্রবিধি গাইডলাইন, স্ট্যান্ডার্ডস বা নির্দেশনায় উল্লিখিত কোনো শর্ত ভঙ্গ অথবা অসাধু পন্থা অথবা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে নিরীক্ষক হিসেবে নিবন্ধন লাভ করেন অথবা এ আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন, তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এক্ষেত্রে অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক পাঁচ বছরের জন্য কারাদণ্ড বা অন্যূন ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।