মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এই ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু জুন পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পের ভৌত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৫৪ শতাংশ। ব্যয় হয়েছে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা।
এই প্রেক্ষাপটে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ যে প্রস্তাব দিচ্ছে, তাতে প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
একনেকে এই প্রস্তাবে অনুমোদন পেলে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সময় পাবেন নির্মাতারা।
সেক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা থেকে ৪৪৬ কোটি ২০ লাখ টাকা বেড়ে ১ হাজার ২১৮ কোটি ২০ টাকা হবে।
ব্যয় বাড়ার কারণ হিসেবে প্রস্তাবে নতুন করে ৪৫০মিটার ফ্লাইওভার বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে ৮ দশমিক ৭০ কিলোমিটার।
প্রস্তাবে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি প্রতিবেশি দেশে ভূমিকম্প বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে ভূকম্পন সহনীয় ‘পট বিয়ারিং’ ও ‘শক ট্রান্সমিশন ইউনিট’ স্থাপন এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন, টেলিফোন লাইন ও অপটিক্যাল ফাইবার অক্ষুন্ন রাখতে গিয়ে পাইলিংয়ের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯১৫ মিটার বেড়ে গেছে।
সংশোধিত প্রকল্পে ফ্লাইওভারের তেজগাঁও-পান্থপথ লিংক রোড অংশটি এফডিসি গেইটের পরিবর্তে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত এগিয়ে সড়কে নামবে। এজন্য নতুন করে ৪৫০ মিটার অংশ সংযোজন করা হচ্ছে। এতে ব্যয় বাড়ছে ৮৫ কোটি টাকা।
ঢাকার যানজট নিরসনে ১৯৯৯ সালের ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন বোর্ডের (ডিটিসিবি) সমীক্ষা অনুযায়ী ২০টি পয়েন্টে ফ্লাইওভার/আন্ডারপাস, বাস বে, বাস টার্মিনাল, পার্কিং এরিয়া নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
তারই অংশ হিসেবে মহাখালী ও খিলগাঁও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়নাধীন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্প ২০১১ সালে অনুমোদন পায়।
২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হলেও দুই দফা সময় বাড়ানো হয়।
সে সময় প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি না করে আন্তঃখাত ব্যয় সমন্বয় করে শুধু মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ হয়নি; প্রকল্প এলাকাজুড়ে নির্মাণ কাজের জন্য নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকা দিয়ে চলাচলকারীদের।
সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) এই প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে।
সংস্থা দুটির ৫৭২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও এখন তা বাড়িয়ে ৭৭৬ কোটি টাকা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ ২০০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।