ফের কমল আমানতের সুদহার

চার মাসের ব্যবধানে আবারও মেয়াদি ও স্থায়ী আমানতের সুদহার কমিয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

শেখ আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2015, 01:08 PM
Updated : 9 Oct 2015, 01:08 PM

সম্প্রতি সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) বিভিন্ন মেয়াদি ও স্থায়ী আমানতে দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার কমিয়েছে।

সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন সুদহার অনুমোদন পায়।

সোনালী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক নতুন সুদহার ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর করেছে। ১১ অক্টোবর থেকে কার‌্যকর হবে অগ্রণী, বেসিক ও বিডিবিএলের নতুন সুদহার।

ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঋণের সুদহার কমানোর লক্ষ্যে আমানতের সুদহার কমানো হয়েছে।

ব্যাংকগুলো সর্বশেষ ৩ মাস এবং তার বেশি তবে ৬ মাসের কম মেয়াদি আমানতের সুদহার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করে।

৬ মাস বা তার বেশি তবে এক বছরের কম সময়ের আমানতের সুদহার ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং এক বছর বা তার বেশি সময়ের আমানতের সুদ হার ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।

আর বিশেষ আমানতের (স্পেশাল নোটিশ ডিপোজিট-এসএনডি) বেলায় আমানতের পরিমাণ ১০ কোটি টাকার কম হলে সুদহার ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা এর আগে ছিল ৫ শতাংশ।

তবে ১০ কোটি টাকার বেশি তবে ১০০ কোটি টাকার কম হলে সেই আমানতের সুদহার ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে এই হার ছিল ৫ শতাংশ।

১০০ কোটি টাকার বেশি আমানত হলে সেক্ষেত্রে সুদহার আগের মতো অর্থ্যাৎ ৫ শতাংশ রাখা হয়েছে।

এছাড়া সঞ্চয়ী আমানতের সুদহারও ৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টি ডটকমকে বলেন, “প্রত্যেকটি ব্যাংকের হাতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। আমানতের সুদহার কমানোর মাধ্যমে প্রধানত ঋণের সুদ হার কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে ঋণ গ্রহণে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করা যায়।”

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, পুরো ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োযোগ্য অর্থ অলস পড়ে রয়েছে। এছাড়া বাজারে (বেসরকারি খাতে) বিনিয়োগের সুযোগ না পেয়ে সরকারের বিভিন্ন সিকিউরিটিজে এক লাখ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে ব্যাংকগুলোর।

রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরিদ উদ্দিন এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“পুরো ব্যাংকিং খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। ঋণের সুদ হার কমিয়ে ঋণ চাহিদা বাড়ানোর লক্ষ্যে মেয়াদি ও স্থায়ী আমানতের সুদ হার কমানো হয়েছে।”

দেশে ৫৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক কাজ করছে। এসব ব্যাংকের সাড়ে ৯ হাজার শাখা রয়েছে।

রাষ্ট্র মালিকানাধীন এই ব্যাংকগুলোর সাড়ে ৩ হাজারের বেশি শাখা রয়েছে সারাদেশে।  

অতিরিক্ত তারল্য থাকার কারণে গত কয়েক মাস ধরে পুরো ব্যাংক খাতে আমানতের সুদ হার কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক আমানতের ভারিত গড় সুদহার ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসে মে মাসে। ওই মাসে গড় সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমেছে গড় সুদহার। জুন মাসে ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ, জুলাই মাসে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও আগস্ট মাসে তার আরও কমে ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

একই সময়ে ঋণের সুদ হারও কমেছে। সর্বশষ অগাস্ট মাসে ঋণের গড় সুদহার দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ।