চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শাহে নুরের আদালতে বুধবার অস্ত্র মামলাটির বাদী চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কামরুজ্জামানের সাক্ষ্য নেওয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব।
সিএমপির এই অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মিতু হত্যার ঘটনায় অস্ত্র মামলার বাদী হওয়ার পাশাপাশি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হিসেবেও রয়েছেন।
তার সাক্ষ্য নেওয়ার মাধ্যমে অস্ত্র মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হলেও বুধবার পুরো জবানবন্দি নেওয়ার আগেই দিনের কার্যক্রম শেষ হয়।
বিচারক আগামী ২২ ফেব্রুযারি মামলায় তার বাকি জবানবন্দি নেওয়ার দিন ঠিক করেছেন।
গত বছরের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে সন্তানের সামনে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু মিতুকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২৮ জুন ‘হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা দুটি অস্ত্র’ ও বেশ কয়েকটি গুলিসহ এহতেশামুল হক ভোলা ও মনির হোসেন নামে দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। পরে বাকলিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ওই মামলা করা হয়।
পুলিশ বলে আসছে, ওই দুইজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা পয়েন্ট ৩২ বোরের দেশি রিভলবার ও ৭ দশমিক ৬৫ বোরের পিস্তলটি মিতু হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছিল।
তার ভাষ্য, পরে পুলিশ ভোলাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় অভিযানে গেলে ব্যাগের ভেতর অস্ত্র থাকার কথা তিনি জানতে পারেন।
এ ঘটনায় গত ২৮ জুলাই ভোলা ও মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন অস্ত্র মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মহিম উদ্দিন।
গত বছরের ২২ নভেম্বর অস্ত্র মামলায় এই দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ১৮ জানুয়ারি থেকে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিল আদালত।
এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় সাবেক এসপি বাবুল আখতারের দায়ের করা হত্যা মামলায় ভোলাকে গ্রেপ্তার করার পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা অস্ত্রের তথ্য বের হয়ে আসে বলে জবানবন্দিতে আদালতকে জানান পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, “পাঁচলাইশ থানায় হওয়া মামলায় (হত্যা মামলা) ভোলাকে গ্রেপ্তার করি। এরপর মিতু হত্যার ব্যবহৃত অস্ত্রের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, ওই অস্ত্র তার কাছে আছে। একজনের কাছে রাখতে দিয়েছে।
“তার দেওয়া তথ্যে, রাজখালীর মনির হোসেনের বাসায় তল্লাশি চালাই। মনিরের ঘর থেকে অস্ত্র উদ্ধার করি। একটি রিভলবার, একটি পিস্তল ও ছয় রাউণ্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো বিশেষজ্ঞদের কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।”
এদিকে মিতু হত্যার ঘটনায় তার স্বামীর দায়ের করা হত্যা মামলায় এখনও অভিযোগপত্র দেয়নি পুলিশ।
কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা নামের সন্দেহভাজন একজন গ্রেপ্তার না হওয়ায় তদন্তও থমকে আছে। মুছাকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে চট্টগ্রামের পুলিশ।
ওই ঘটনায় পুলিশের হাতে সাতজন গ্রেপ্তার হওয়া ছাড়াও আরও দুজন পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও আনোয়ার হোসেন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গত ২৬ জুন আদালতে জবানবন্দি দেন।