চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। কোথাও কোথাও রান্নার জন্য দিনভর গ্যাসের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
Published : 19 Jan 2016, 09:25 PM
নগরীর ঝাউতলা এলাকার গৃহিনী সালেহা খাতুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখেন চুলায় গ্যাস নেই। বিকেলে আবার চুলায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে রান্না করে দুপুরের খাবার খান এই পরিবারের সদস্যরা।
সালেহা খাতুন বলেন, তাদের সকালের নাস্তা সারতে হয়েছে আগে বানিয়ে রাখা ঠাণ্ডা পিঠা খেয়ে।
রাহাত্তারপুলের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা রুমা আক্তারের সমস্য একটু ভিন্ন। ওই এলাকায় রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ ছিল এদিন। তারপর সন্ধ্যা পর্যন্ত আর গ্যাসের দেখা মেলেনি।
সোমবার থেকে বন্দর নগরীর বেশিরভাগ এলাকায়ই গ্যাস সরবরাহে এই সঙ্কট শুরু হয়েছে।
এলাকাভেদে এই সঙ্কটের চিত্রও কিছুটা ভিন্ন। নগরীর কিছু এলাকায় বিকালে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও কয়েকটি এলাকায় গ্যাস আসে রাতে।
নগরীর গোয়ালপাড়া এলাকার গৃহিণী মীরা ঘোষের যৌথ পরিবারে সদস্য সংখ্যা ১৮।
সোমবার গ্যাসের সমস্যা শুরু হলে পরদিন দুপুরের খাবার ওই রাতেই রান্না করে রাখেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে পরিবারের সদস্যদের জন্য মাটির চুলায় নাস্তা তৈরি করেছেন।
মীরা ঘোষ বলেন, “বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পরিবারের লোকজন দুপুরের খাবার খেল। এখন আবার রাতের খাবার রান্নার প্রস্তুতি শুরু করেছি। কখন গ্যাস চলে যায় কে জানে?”
চট্টগ্রামে গ্যাস সঙ্কটের বিষয়ে বিকেলে পেট্রোবাংলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করেছেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিল) মহাব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) খন্দকার মতিউর রহমান।
চট্টগ্রামে কেজিডিসিএল- এর গ্রাহকদের দৈনিক চাহিদা ৪৮০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে সাধারণত ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ করা হলেও সোমবার থেকে তার চেয়েও কমেছে সরবরাহ।
সোম ও মঙ্গলবার সকালে সরবরাহ ছিল ২২০ মিলিয়ন ঘনফুটের কম। দুই দিন বিকেলেই সরবরাহ বাড়িয়ে ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেওয়া হয়েছে।
নগরীর চকবাজার, বাকলিয়া, দেওয়ান বাজার, মুরাদপুর, অক্সিজেন, জুবিলী রোড, বন্দরটিলা, ইপিজেড, হালিশহর, আগ্রাবাদের কিছু এলাকা, লালখান বাজার, জামালখানসহ বেশিরভাগ এলাকায় গ্যাসের সঙ্কট চলছে।
এদিকে গ্যাস সরবরাহ কমায় বিপাকে পড়েছেন গাড়ির চালক-মালিকরা।
মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এজন্য কোথাও কোথাও সড়কে যানজটও সৃষ্টি হয়।
কেজিডিসিএল কর্মকর্তা খন্দকার মতিউর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের দুটি সার কারখানার মধ্যে সিইউএফএল বন্ধ এবং কাফকোয় চাহিদার তুলনায় কম গ্যাস সরবরাহ করতে পারছেন তারা।
“চট্টগ্রাম শহর সরবরাহ লাইনের শেষদিকে হওয়ায় গ্যাসের চাপও কম।”