হাভার্ডের গল্প জানলেও খবর নেই ঢাবির

যৌন হয়রানি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড ইউনিভার্সিটির নীতিমালা নিয়ে শিক্ষার্থীদের গল্প শোনালেও একই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা পাস হয়েছে কি-না, তা বলতে পারলেন না বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2014, 07:16 PM
Updated : 10 June 2014, 11:52 AM

যদিও একই অনুষ্ঠানে উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং যৌন হয়রানি বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নের কৃতিত্ব দাবি করেন তিনি।

সোমবার পাবলিক লাইব্রেরিতে একটি সেমিনারে যোগ দিয়ে অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী বলেন, “আমরা যদি নিজেরাই উদ্যোগী হই তাহলেই সমাজ বদলাবে। সমাজ কিন্তু বদলে যাওয়ার জন্যই প্রস্তুত। কিন্তু উদ্যোগ তো কাউকে না কাউকে নিতে হবে।

“জেন্ডার ইস্যুর প্রতি আমরা যেন যথাযোগ্য দায়িত্ব পালন করি। একটু নস্টালজিক ফিলিংও আসে। ১৯৯৬ এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমি যখন ঢাকা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলাম, জেন্ডার অ্যান্ড উইমেন স্টাডিজ বিভাগটা আমার সময়েই হয়েছিল।

“আমি করেছিলাম বললে একটু আমিত্ব হয়,” একথাও বলেন তিনি।

অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী বলেন, “সেখানে আরো বলতে হয়, আমার সময়ই যৌন হয়রানির মৌল নীতিমালা (সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের কোর কন্ডাক্ট) আমি প্রণয়ন করেছিলাম। কিন্তু সেটা রেটিফাই করে যেতে পারিনি।”

এরপর মঞ্চে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, এখন নিশ্চয়ই হয়েছে?

কয়েক সেকেন্ড তাদের চেহারার দিকে তাকিয়েও থাকেন। তবে কোনো  জবাব না পেয়ে আবার দর্শক সারির দিকে তাকিয়ে বলেন, এখনো সেটা হয়েছে কি না জানি না।

নারীর প্রতি নির্যাতন দমনে বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নীতিমালা রয়েছে জানিয়ে এক্ষেত্রে হাভার্ড ইউনিভার্সিটিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী।

“হাভার্ড ইউনিভার্সিটির কোড অব কন্ডাক্ট ফর দ্য স্টুডেন্ডস। সেখানে কিন্তু ডেন্ডার ইস্যুজ প্রমিনেন্টলি ডিসপ্লেইড। এখানে লজ্জার কিছু নেই। সেখানে এটা স্ট্রিকলি ফলো করা হয়।”

বাংলাদেশে সেই ধরনের পরিবেশ এখনো গড়ে না উঠলে সে পথে এগোনোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “মরুতে ফুল ফোটে না। আবর্জনার স্তূপেও ফুল ফোটে না।

“একই সমাজে ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন যদি প্রস্ফুটিত ফুলের মতো বৃদ্ধি পেতে হয়। মানসিক পরিবেশটা যদি আমি সুন্দর করে দিতে পারি। তাহলেই ফুল প্রস্ফুটিত হবে।”

টেকসই উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্ন, ঝুঁকিমুক্ত ও নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ‘ব্রিজিং ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড ইনোভেশনস ইন অ্যাকশন ফর সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট’ (বিআইএএসডি) নামের একটি সংগঠন এই সেমিনারের আয়োজন করে।

কেস স্টাডি হিসাবে সেমিনারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন লায়লা তাসনিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের পরিচ্ছন্নতা ও নারী বান্ধব পরিবেশের বিষয়টি সেখানে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক মো. রিয়াজুল হক, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক এবং বিআইএএসডি’র চেয়ারম্যান হেলাল হোসেন ঢালী।

সেমিনারে মিডিয়া পার্টনার ছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং একাত্তর টেলিভিশন।