শিক্ষকরা বলছেন, চেয়ারপার্সন ড. সানজিদা ফারহানা ‘অধিকতর যোগ্য’ প্রার্থীকে বাদ দিয়ে ‘বিতর্কিত’ একজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
শিক্ষকদের চিঠি পাওয়ার পর সিন্ডিকেট সভায় ওই নিয়োগের প্রক্রিয়া আটকে গেছে।
উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১তম সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগের বিষয়টি চুড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। ওই দিন সকালেই বিভাগটির আটজন শিক্ষক এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর উপাচার্য সিন্ডিকেটে নিয়োগের বিষয়টি না তুলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়াকে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
“তার রিপোর্টের উপরই পরবর্তী সিন্ডিকেটে বিষয়টি উঠবে,” বলেন ড. মীজানুর।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা জানান, চেয়ারপার্সন আব্দুল কুদ্দুস নামে যাকে নিয়োগের চেষ্টা চালাচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক সহকারী অধ্যাপক বলেন, “যার বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ দিয়েছি, আব্দুল কুদ্দুস; সে আমাদের বিভাগেরই শিক্ষার্থী। বিভাগে তার রেপুটেশন খুব একটা ভালো না।”
আরেক শিক্ষক বলেন, যোগ্যতা বিচারেও কুদ্দুসের চেয়ে অন্য অনেকেই এগিয়ে ছিলেন।
“প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের যদি অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়, তাহলে আব্দুল কুদ্দুসকে না নিয়ে তার চেয়ে অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী আমিনুর রহমানকেই সুপারিশ করা যেত।”
যাকে নিয়ে আপত্তি সেই আব্দুল কুদ্দুস স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয় ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় হয়েছেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় ব্যাচের আমিনুর রহমান স্নাতক ও স্নাতকোত্তর দুটিতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন। তিনিও নিয়োগের আবেদন করেন; তবে নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশে তার নাম নেই।
“তখন চেয়ারপার্সন আমাদের যুক্তি দিয়েছেন যে, প্রথম ব্যাচের স্টুডেন্ট, না নিলে সে মন খারাপ করবে,” বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ শিক্ষক।
বিভাগের অধ্যাপক শাওলী মাহবুব জানান, প্রশাসনিকভাবে সমাধান করতেই উপাচার্যের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।
“আমরা অভিযোগ দিয়েছি। তবে যেহেতু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাই আমরা চাচ্ছি প্রশাসনিকভাবেই যেন এর সমাধান হয়।”
এদিকে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ অস্বীকার করে বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. সানজিদা ফারহানা বলেন, নিয়ম মেনেই নিয়োগ বোর্ড আব্দুল কুদ্দুসের নিয়োগে সুপারিশ করেছিল।
সুপারিশের আগে শিক্ষকরা কুদ্দুসের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জানাননি বলেও দাবি তার।
“নিয়োগ কমিটি তাকে সুপারিশ করেছে। আর বিভাগের কথা আমি আপনাকে বলবো না,” বলেন তিনি।