বিক্রেতারা বলছেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা এবার ঈদুল আজহার সঙ্গে হওয়ায় এবার পোশাকের বাজার জমেছে ঈদুল ফিতরের মতোই।
টাঙ্গাইল থেকে পূজা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন নূপুর বসাক। স্বামী, দুই ছেলে,ভাগনা-ভাগ্নি, ভাতিজা-ভাতিজিদের নিয়ে প্রথমবারের মতো এসেছেন বসুন্ধরা সিটিতে।
তিনি বলেন, “বাচ্চাদের জামা আগেই কেনা হয়েছে। এখান থেকে কেমন কিছু কিনব না, দাম অনেক বেশি। বাজেটের মধ্যে কিছু পছন্দ হয়ে গেলে ভেবে দেখবো।”
তবে জুতো কেনার পরিকল্পনা আছে বলে জানালেন তিনি। নিজের শাড়িটা এখনো কেনা না হলেও বাচ্চাদের জন্য পাঞ্জাবি যেমন কেনা হয়েছে, তেমনি টি-শার্ট,প্যান্ট এসবও কেনা হয়েছে।
শাড়ি কিনবেন কোথা থেকে জানতে চাইলে নূপুর জানান, তার স্বামী আনন্দ বসাকের নিজের তাঁত রয়েছে টাঙ্গাইলে। নিজেদের তাঁতের শাড়িই পুজাতে পড়বেন তিনি।
আনন্দ বসাক বলেন, “সাধারণতঃ দুই ঈদেই আমাদের মূল লেনদেনটা হয়, বিশেষ করে রোজার ঈদেই। এবার কোরবানীর ঈদের সঙ্গে দূর্গাপূজা পড়াতে বাজারে রোজার ঈদের মতোই জমেছে। তবে চাপ আসলে অনেক কম।
“মাত্র দুই মাস আগেই আরেকটা উৎসব চলে যাওয়ায় বেশির ভাগ কাপড় ব্যবসায়ীই ওইসময়ই দোকানে মাল তুলে ফেলেছেন। তাই এই উৎসবে নতুন কাপড়ের চাহিদা কম।”
তিনি বলেন, "রোজার ঈদে কাতান জাতীয় শাড়ির চাহিদাটা বেশি থাকে। তবে পূজাতে জামদানি শাড়ির চাহিদা বেশি।"
শপিং মল, মার্কেটগুলোর পাশাপাশি অনলাইন বিপণীগুলোতেও চলছে কেনাকাটার ধুম। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার মূল লক্ষ্য পোশাকের সঙ্গে আনুষাঙ্গিক সাজসজ্জার উপকরণ।
ফেইসবুকে অনলাইন শপ শপাহলিকসের অন্যতম কর্ণধার জেরিন তাসনিম জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের অনলাইন শপে বিভিন্ন ধরনের আইটেমের অর্ডার বেড়ে গেছে প্রায় কয়েক গুণ।
তিনি বলেন,"ভারতীয় সিনেমা ও টেলিভিশন সিরিয়ালগুলোতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রগুলোর যে পোশাক পড়ে অভিনয় করেন, সেই একই ধরনের পোশাককে 'রেপ্লিকা ড্রেস'বলা হচ্ছে। রেপ্লিকা শাড়ি ও ড্রেসের চাহিদা গত ঈদুল ফিতর থেকেও অনেক বেশি।"
জেরিন জানান, বিশেষ করে শিফন ও শিফন জর্জেটের উপর রেপ্লিকা শাড়ি বেশি চলছে এবার। এছাড়া শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে চুড়ি তো অবশ্যই লাগবে। ‘সেহেরচূড়া’ নামের অনেক বেশি নকশা করা এক ধরনের চুড়ি খুব চলছে এবার।
“ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে এবার পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে হাতাকাটা কোট বেশ চলছে, ‘মুজিব কোট’ নামেই সবাই চিনছে একে। আর আনুষঙ্গিক হিসেবে রিস্টব্যান্ড চলছে এবার অনেক বেশি।”
এছাড়া পুজোর আমেজের সঙ্গে মিলিয়ে ছেলেরা অনেকে পাঞ্জাবির সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ধুতিও কিনছেন বলে জানালেন অনলাইন শপের এ কর্ণধার।