এতে ট্রাক টার্মিনাল, এসি ওয়ার হাউজ, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট জোনসহ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সহজ করতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে।
এ উন্নয়ন কাজ শেষ হলে বন্দরে বিরাজমান সব সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন পেট্রাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট ওয়েল ফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট জোনসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকবে পেট্রাপোলে।
‘এতে আমদানি ও রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে।’
বাংলাদেশ থেকে আসা ট্রাকগুলোর পেট্রাপোল বন্দরে খোলা আকাশের নিচে দিনের পর দিন পড়ে থাকার অবসান হবে এবং ট্রাক থেকে মালামাল চুরি ও ট্রাক জট থাকবে না বলে আশা করছেন কার্ত্তিক।
বেনাপোল শুল্কভবনের যুগ্ম কমিশনার-১ ফাইজুর রহমান জানান, পেট্রাপোলে এতদিন পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ছিল না।
তিনি বলেন, “এটিকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করার একটি ম্যাপ পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাদের দেখিয়েছেন। বেনাপোল বিজিবি ক্যাম্পের পেছন দিকে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে বন্দর আধুনিকায়নের কাজ তারা ইতিমধ্যে শুরু করেছেন।”
ভারত সরকারের অর্থায়নে বন্দরে তিনটি শেডের নির্মাণ কাজ ২০১২ সালের প্রথম দিকে শুরু হয় বলে জানালেন ভারতের পেট্রাপোল এলসি স্টেশনের কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রমেজ সেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘এর আগে ২০১১ সালের ২৭ অগস্ট এই অবকাঠামো গড়ে তোলার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।’
৩শ’ একর জমির উপর এ অবকাঠামো বানাতে খরচ হবে ২৭২ কোটি রুপী। সব কাজ শেষ হতে ২০১৫ সাল গড়াবে বলে মনে করছেন তিনি।
নির্মাণাধীন শেড তিনটি এ বছরই চালু হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সব অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা রয়েছে।
বেনাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিয়ার রহমান জানান, এতদিন ওপারে রপ্তানি টার্মিনাল ও ওয়ার হাউজ না থাকায় ব্যবসায়ীদের রপ্তানিতে আগ্রহ কম ছিল।
‘স্থান সংকটের কারণে ট্রাক নিয়ে দিনের পর দিন পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এতে ট্রাক-ডেমারেজ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারাচ্ছিল।’
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কর্মাসের ল্যান্ডপোর্ট সাব কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমানের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেন, ‘পেট্রাপোল এলসি স্টেশনটিকে আধুনিক বন্দরে পরিণত করার জন্য আমাদের চেম্বার অব কমার্স ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
‘দীর্ঘদিন পর ভারত সরকার পেট্রাপোল স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করে এই স্টেশনকে বন্দরে রূপান্তরিত করার কাজ শুরু করেছে।’
উন্নত বিশ্বের আধুনিক বন্দরের সব সুযোগ-সুবিধা থাকছে এতে। ট্রাক টারমিনাল ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ারহাউজ নির্মাণ হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেষে ভারতের ’রাইস’ নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০১৫ সালের মধ্যে বন্দর উন্নয়ন কাজ শেষ করার দায়িত্ব নিয়েছে।
উন্নয়ন কাজ শেষ হলে পেট্রাপোল এলসি স্টেশন আন্তর্জাতিক বাজারে বন্দরের পরিচিতি পাবে বলেও আশা তার।
এই উন্নয়নে দুদেশের বাণিজ্যে আরও গতি আসবে বলে মনে করছেন বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল।
পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্মকর্তা এস কে বোস জানান, পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি ও উভয় দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রীদের জন্য আধুনিক ব্যবস্থাও এই পরিকল্পনায় রয়েছে।
আগেই বেনাপোল বন্দরটির আধুনিকায়ন শেষ হলেও পেট্রাপোল এলসি স্টেশনের কারণে দুপারের ব্যবসায়ীদের বিড়ম্বনা কমেছিল না।