কোরবানির পশুর সরবরাহে বন্যার প্রভাব পড়বে না: প্রতিমন্ত্রী

আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু সরবরাহের ক্ষেত্রে বন্যার প্রভাব পড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2017, 02:25 PM
Updated : 17 August 2017, 02:25 PM

তিনি বলেছেন, “বন্যায় বেশ কয়েকটি জেলায় গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কিছু জায়গায় গরু, ছাগল, ভেড়া মারা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, তাতে বন্যার কারণে কোরবানির পশুর ঘাটতি দেখা দেওয়ার কোনো আশঙ্কা এখনও তৈরি হয়নি।”

রাজধানীর পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) বৃহস্পতিবার এক সেমিনারের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, গত বছর দেশে এক কোটি চার লাখ পশু কোরবানি হয়েছিল। এবার দেশে কোরবানিযোগ্য পশু আছে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার।

“আমরা ধরে নিতে পারি, প্রতি বছর কোরবানি দেওয়া লোকের সংখ্যা বাড়ে। এ হিসাবে এবার এক কোটি ১০ লাখ থেকে এক কোটি ১৫ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে।”

আর বন্যা শুরুর পর যে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয় পেয়েছে, তাতে প্রাণিসম্পদের বড় ধরনের ক্ষতির তথ্য নেই বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

“বন্যাকবলিত এলাকায় পশুখাদ্যের কিছু সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে বিভিন্ন স্থানে খাবার সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় খুবই কঠিন অবস্থা, সেখানে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।”

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের কোনো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনও তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খামারিদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করা হবে।

“খামারিরা যদি দুর্বল হয়ে পড়েন এবং তারা খামার পরিচালনা করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

এবার ঈদের আগে ভারতীয় গরু আসবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ভারতীয় গরু ব্যাপকভাবে আসার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখি না। আমরা ভারতের গরু আসার পক্ষেও নই। কারণ এখন যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে প্রাণিসম্পদে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছি।”

বাইরে থেকে পশু আমদানি করা না হলে খামারিরা উৎসাহিত হবেন এবং উৎপাদনে আরও বেশি মনোযোগী হবেন বলে মত দেন তিনি।

‘দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত’ শীর্ষক এ সেমিনারে ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে ‘ভুল’ হিসেবে চিহ্নিত করে পিকেএসএফ সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন করা যায় না।

“ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে একজনকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তার প্রয়োজন ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তহলে সে কী করবে? সে তো এটা ভেঙে খাবে।”

কাজী খলীকুজ্জমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল আনোয়ার, পিকেএসএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম, ইআরএফ এর সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বক্তব্য দেন।

সেমিনারের পর পিকেএসএফ ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এর আওতায় প্রতি বছর টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও ইন্টারনেটের তিনটি সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য নয়টি সম্মাননা দেওয়া হবে।