মোবাইল কলরেট পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব আটকে গেছে

মোবাইল ফোনের কলরেট পুনঃনির্ধারণে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2017, 11:58 AM
Updated : 7 August 2017, 11:58 AM

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার কাছে প্রস্তাবটি এসেছিল, পুনরায় বিশ্লেষণ করতে আজ বিটিআরসিতে পাঠিয়েছি, কারণ বর্তমান সরকারের মূল নীতি হচ্ছে, গ্রাহক পর্যায়ে যেন কোনোভাবেই খরচ বৃদ্ধি না হয়।”

বর্তমানে একই অপারেটরে ফেন কলের জন্য (অন-নেট) গ্রাহকদের প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা এবং অন্য অপারেটরে (অফ-নেট) ৬০ পয়সা খরচ হয়। আর প্রতি মিনিটের সর্বোচ্চ কলরেট এখন দুই টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।

সম্প্রতি কমিশন সভায় কলরেট পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রস্তাব পাঠায় বিটিআরসি।

সেখানে অন-নেটে সর্বনিম্ন কলরেট বাড়িয়ে ৩৫ পয়সা, অফনেটে সর্বনিম্ন কলরেট কমিয়ে ৪৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ সীমা দুই টাকা থেকে কমিয়ে দেড় টাকা করার কথা বলা হয়।

বিটিআরসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ওই কলরেট চালু করা হবে। পরে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) পরামর্শকের মতামত নিয়ে কলরেটের বিভিন্ন স্তর চূড়ান্ত করা হবে।

তারানা হালিম বলেন, “এ প্রস্তাবে কোন জায়গায় খরচ বাড়বে আবার কোন জায়গায় খরচ কমবে, ওভারঅল ইমপ্যাক্টটা কী হবে- তার একটা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। গ্রাহক যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা মাথায় রেখেই বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে। ফাইলটি সেভাবেই ফেরত গেছে।”

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপারেটরদের লাভক্ষতি বা রাজস্ব আয়ের চেয়ে এখানে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হল গ্রাহককে যেন বাড়তি টাকা গুণতে না হয়।

এর আগে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) পরামর্শকের সুপারিশে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন কলরেট নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার।

প্রায় সাত বছর পর বিটিআরসি তা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিল এই যুক্তিতে যে, নতুন কাঠামো চালু হলে পিছিয়ে থাকা অপারেটরগুলো সুবিধা পাবে এবং বাজার ভারসাম্য তৈরি হবে। তাছাড়া সামগ্রিকভাবে এ খাতে আয় বাড়বে।

বিটিআরসির ফেব্রুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল ফোন গ্রাহকের মধ্যে ৫ কোটি ৯৩ লাখই গ্রামীণ ফোন ব্যবহার করেন, যা দেশের মোট গ্রহকের ৪৫ শতাংশ।   

একীভূত হওয়ার পর রবি-এয়ারটেল মিলে ৩ কোটি ৫০ লাখ এবং বাংলালিংক ৩ কোটি ১৩ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে।

আর সিটিসেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রায়াত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের হাতে রয়েছে সবচে কম, ৩৭ লাখ গ্রাহক।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোবাইল ফোনে কলরেট পুনঃনির্ধারণে অতীতে অপারেটরদের সাথে আলোচনা করিই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিটিআরসি যদি কলরেট পুনঃনির্ধারণ করতে চায়, তাহলে অপারেটরদের সাথে পরামর্শ করেই তা করা উচিত।”