চট্টগ্রাম-বেনাপোল বন্দর অগাস্ট থেকে ২৪ ঘণ্টা খোলা

আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে আগামী ১ আগস্ট থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও বেনাপোল স্থল বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2017, 08:01 AM
Updated : 19 July 2017, 08:01 AM

সচিবালয়ে বুধবার এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা ব্যাংক ও কাস্টমস অফিস খোলা রাখা হবে। এনবিআর ও ব্যাংকগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ব্যাপারে একমত, তারা প্রাথমিক কার্যক্রমও শুরু করেছে।”

আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেট্রাপোল বন্দরে একই কার্যক্রম চালুর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান নৌমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমাদের সচিব সাহেব ও কাস্টমসের কর্মকর্তারা বেনাপোল বন্দরে গিয়েছিলেন। তারা সেই কার্যক্রম শুরু করার প্রাথমিক কাজ শেষ করেছেন।”

চট্টগ্রাম বন্দরও ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, আমদানি ও রপ্তানিকারকরা যাতে দেশের বড় বন্দর দুটি পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা নিতে পারেন, সেজন্যই এ উদ্যোগ।

“আগামী ১ অগাস্ট থেকে আশা করি আমরা এটা (২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে পারব। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা এ ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছি, তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।”

বেনাপোল স্থলবন্দর

বাংলাদেশ ও ভারতের স্থলবাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়েই হয়। এই বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়; যাতায়াত করেন প্রায় ১৩ লাখ যাত্রী।

আর পুরো দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি হয় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে। গত অর্থবছর এ বন্দরে প্রায় ২৩ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজর ৩৮৬ কোটি টাকার বেশি।

গত ২ জুলাই সচিব সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্দরে আমদানি-রপ্তানির কাজে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমস স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী সব বন্দরের জন্যই ওই নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, “সব বন্দরে একইভাবে আমদানি-রপ্তানি হয় না। সেজন্য এখনই সব বন্দর তা (২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা) হচ্ছে না। আমরা মনে করি, ভবিষ্যতে যখন মালামাল আমদানি-রপ্তানি বেশি হবে, তখন সেখানে একই পদ্ধতিতে যাব।”

চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি গ্যান্ট্রি ক্রেন বিকল থাকায় সম্প্রতি মালামাল খালাসে সমস্যা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে তিনটি রাবার গ্যান্ট্রি ক্রেন এসে গেছে। এ বছরের মধ্যে ১১টি রাবার গ্যান্ট্রি ক্রেন চলে আসবে। ২০১৮ সালের মধ্যে আরও ছয়টি গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে আরও তিনটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে নৌমন্ত্রী বলেন, “আশা করছি ২০১৮ সালের মধ্যে পতেঙ্গা টার্মিনালকে আমরা অপারেশনে নিয়ে আসতে পারব।”

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে শাজাহান খান বলেন, বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, সেহেতু এখন তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না।

নৌসচিব অশোক মাধব রায় ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।