বিদেশে আরও ডলার পাঠানোর সুযোগ চায় আইটি কোম্পানি

তথ্য প্রযুক্তি ও সফটওয়ার কোম্পানিগুলোর দেশের বাইরে থেকে পণ্য বা সেবা কেনার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর সীমা বাড়নোর সিদ্ধান্তকে মোটা দাগে এই খাতের উদ্যোক্তারা ইতিবাচক মনে করলেও কেউ কেউ এটাকে অপর্যাপ্ত মনে করছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 08:15 AM
Updated : 25 April 2017, 08:24 AM

সম্প্রতি এই সীমা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার ডলারে উন্নীত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই অর্থ ক্রেডিট কার্ডে বা ওয়্যার ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।

নিতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এই খাতের ব্যবসায়ীরা এখন থেকে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে ৬ হাজার ডলার এনডোর্স করতে পারবেন, যা আগে আড়াই হাজার ডলার ছিল।

তথ্য প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বেসিসের সভাপতি মোস্তফা জাব্বার ও সহ-সভাতি এম রাশিদুল হাসান বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তারা দুজনই মনে করেন, এর ফলে রপ্তানিমুখী নয় এমন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম আরও সহজ হবে।

তবে তথ্য প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ উদ্যোক্তাদের একজন বেসিসের সাবেক সভাপতি এ কে এম ফাহিম মাশরুরের মতে, দেশে রপ্তানিমুখী নয় এমন তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সক্ষমতা বাড়ায় অনেকেরই বছরে এর প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ বিদেশি মুদ্রায় কেনাকাটার প্রয়োজন হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা এটাকে বাড়িয়ে মিনিমাম ৫০ হাজার ডলার করতে বলেছিলাম। কারণ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অনেক কোম্পানি আছে যারা এক্সপোর্ট করে না, সার্ভার কেনাসহ বিভিন্ন কারণে তাদের বছরে ৫০ হাজার ডলারের বেশি বাইরে পাঠাতে হয়।”

যেসব তথ্যপযুক্তি কোম্পানি সফটওয়ারসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেন, তারা সেই আয়ের একটা অংশ বিদেশি পণ্য বা সেবা কিনতে ব্যয় করতে পারেন। তারা ওই রপ্তানি আয়ের ৬০ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংক হিসাবে রাখতে পারেন, যেটাকে এক্সপোর্ট রিটেনশন কোটা (ইকিউআর) অ্যাকাউন্ট বলা হয়।

আরেক প্রজ্ঞাপনে তথ্য প্রযুক্তি রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে ইকিউআর অ্যাকাউন্টের কোটা ১০ শতাংশ বাড়িয়ে মোট রপ্তানি আয়ের ৭০ শতাংশ করার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম বলেন, “এটা একটা ভাল জিনিস হয়েছে। যে সব তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি বাইরে রপ্তানি করে তাদের ফরেন কারেন্সিতে বাইরে পেমেন্টের সুবিধা বাড়ল।”

এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য আলাদা ‘ফরম-সি (আইসিটি)’ চালুর সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানান ফাহিম।

“আগে অনেক রপ্তানি রেকর্ড হত না তবে এ বিষয়ে ব্যাংক গুলোকে বেশি উদ্যোগ নিতে হবে।”

বিদেশি আয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে আনতে বর্তমান ‘সি ফর্ম’ এর মাধ্যমে আইটি/আইটিইএস শিল্প খাতের আযের হিসাব সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। তাছাড়া বর্তমান ব্যবস্থাটি জটিল হওয়ায় রপ্তানিকারকরা খুব সহজে এটি ব্যবহার করতে পারেন না।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য আলাদা ফরম-সি (আইসিটি) চালু হওয়ায় রপ্তানিকারদের জটিলতা যেমন কমবে তেমনি এ খাতের প্রকৃত আয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।