পাটে ভারতের শুল্ক দুঃখজনক: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশের পাটপণ‌্যে ভারতের অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে এই বাধা দূর করতে পদক্ষেপ চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2017, 01:16 PM
Updated : 17 Jan 2017, 01:17 PM

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নব নির্বাচিত কমিটির সদস‌্যরা মঙ্গলবার বাণিজ‌্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ দুঃখজনক। ভারত বাংলাদেশকে তামাক ও মদ ছাড়া সকল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা দিচ্ছে। অথচ পাটপণ্য রপ্তানির উপর অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে।”

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, বাংলাদেশ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৯১ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে, যার ২০ শতাংশ গেছে ভারতে।

বাংলাদেশি উৎপাদকরা পাট রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা পাওয়ায় ভারতীয় পাট মার খাচ্ছে এমন অভিযোগ জানিয়ে দেশটির অ্যান্টি-ডাম্পিং অ্যান্ড অ্যালাইড ডিউটিজ (ডিজিএডি) অধিদপ্তর গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ও নেপালের পাটজাত পণ‌্যে প্রতিরক্ষামূলক শুল্ক আরোপের সুপারিশ করে। 

এর ভিত্তিতে জানুয়ারির শুরুতে ভারতের রাজস্ব বিভাগ অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান ভারতে পাটসুতা, চট ও বস্তা রপ্তানি করতে চাইলে প্রতি মেট্রিক টনে ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার শুল্ক দিতে হবে।

পাটের পাশাপাশি আরও কিছু রপ্তানি পণ্যে ভারত সাড়ে ১২ শতাংশ হারে কাউন্টারভেলিং ডিউটি (ভর্তুকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা হিসেবে) শুল্ক আরোপ করেছে। এ বিষয়টিকেও বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে দেখছেন বাণিজ‌্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। আবারও বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

“ভারত বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছে। এজন্য বাংলাদেশ ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ‌্যের ক্ষেত্রে সকল বাধা দূর করতে আন্তরিক হবে।”

তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে ২৫টি পণ্য বিশ্বের ৬৮টি দেশে রপ্তানি করে আয় করত মাত্র ৩৪৮ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ১৯৬টি দেশে ৭২৯টি পণ্য রপ্তানি করে আয় হচ্ছে ৩৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

“আগামী অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে ৩৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে রপ্তানি লক্ষ্য হবে ৬০ বিলিয়ন ডলার। আশা করছি রপ্তানি লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।”

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, ডিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম খান, সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম, ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেইন এ সিকদার, সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম রেজাউল কবীরসহ পর্ষদের বেশ কয়েকজন সদস্য এ সময় উপস্থিত ছিলেন।