চিনির দাম বাড়ছেই

ঢাকায় ভোগ্যপণ্যের বাজারে ডাল ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও প্রতিদিন বাড়ছে চিনির দাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2016, 11:32 AM
Updated : 22 July 2016, 11:32 AM

এছাড়া শাক-সবজি, মসলা, পেঁয়াজ-রসুন, চালসহ অন্যান্য পণ্য আগের সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

শুক্রবার ঢাকার বাড্ডা, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারের কয়েকজন মুদি দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি দাম বাড়ায় খুচরায় চিনি কোনোভাবেই ৭০/৭২ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না।

অবশ্য পাইকাররা বলছেন, গত দুই সপ্তাহে যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে কয়েকটি মিল বন্ধ ছিল। এখন চালু হলেও সরবরাহ খুব কম। চিনিবাহী ট্রাক দিনের পর দিন মিল গেইটে অপেক্ষায় থাকার কারণে ক্রয়মূল্য বেড়ে গেছে।

ঢাকার মৌলভীবাজারে চিনির খুচরা বিক্রেতা আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তারা ৫০ কেজি বস্তার চিনি ৩৩শ টাকায় পাইকারি বিক্রি করছেন। সে হিসাবে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ৬৬ টাকা।

সরকারের বিভিন্ন রকম করারোপ, সরবরাহের ঘাটতিসহ বিভিন্ন কারণে এই নিত্যপণ্যটির দাম বেড়ে গেছে বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী।

একই বাজারে দেশবন্ধু চিনিকলের চিনি ৩১শ টাকায় হতে দেখা গেছে।

এদিন মহাখালীতে একটি মুদি দোকানে সিটি গ্রুপের তীর ব্র্যান্ডের চিনির এক কেজির প্যাকেটের গায়ে খুচরা মূল্য লেখা ছিল ৭৫ টাকা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ৫ টাকা মূল্যের প্যাকেটসহ ওই চিনির মূল্য দাঁড়ায় ৬৫ টাকা। কোম্পানির পক্ষ থেকে ওই দামেই চিনি ছাড়া হচ্ছে। এর সাথে বিপণন খরচ ও মুদি দোকানিদের লভ্যাংশ মিলিয়ে চিনির খুচরা মূল্য ৭৫ টাকা লেখা হয়েছে। তবে বাস্তবে আরও কম দামেই বিক্রি হয়। 

বাড্ডার মুদি দোকানি মুরাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কাস্টমারের কাছে চিনির দাম বলতে নিজেরই অনেক খারাপ লাগে। এতো দামে কখনও চিনি বিক্রি করিনি।

৩৩শ টাকায় চিনির বস্তা কিনে ৭০ থেকে ৭২ টাকায় খুচরা চিনি বিক্রি করছেন তিনি।

এদিকে চলতি সপ্তাহে ডালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন দোকানি।

মহাখালীতে মুদি দোকানি শাজাহান জানান, বাজারে গত কয়েক দিনে ডালের দাম কিছুটা কমেছে; বিশেষ করে মসুর ডালের দাম।

দেশি মসুর ডাল খুচরায় এখন ১৩০ টাকা বিক্রি করা যাচ্ছে। যদিও এক সপ্তাহ আগে মহাখালীতে এই ডালের কেজি ১৪০ টাকা ছিল। মুগডাল ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি। খেসারি ডাল ৭৮ টাকা কেজি।

ফাইল ছবি

অবশ্য খুচরা বাজারে ডালের দাম আরও কম হওয়া উচিত বলে মনে করেন পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ডাল ব্যবসায়ী চুন্নু হাজি।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাইকারি দাম কম হলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনো কারণ ছাড়াই কেজিতে ১০/১৫ টাকা বেশি লাভ করছে। অথচ ১/২ টাকা লাভ করাই যথেষ্ট।

চুন্নু হাজির রাজ্জাক বিতানে নেপাল থেকে আমদানি করা মসুর ডাল ১৪০ টাকা, দেশীয় ডাল ১৩২ থেকে ১৩৩ টাকা, কানাডা ও তুরস্ক থেকে আসা ৯০ থেকে ৯২ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া মুগডাল ৬৫ থেকে ৭৯ টাকা, ছোলা ৮০ থেকে ৮১ টাকা, ভালো মানের ছোলা ৯২ টাকা, খেসারি ৬৯ টাক ডাবলি ৪৫ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।

রোজায় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠলেও তা এখন দেড়শ টাকার ঘরে নেমে এসেছে।

বাড্ডায় ফার্মের মুরগি বিক্রি হচ্ছে দেড়শ টাকা কেজিতে। আর মহাখালীতে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে। কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এদিন বাড্ডা ও মহাখালীতে টমেটো ১০০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, চিচিঙা ৫০ টাকা, কচুমুখী ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছিল।