নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে নতুন চালের স্বস্তি

কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা পেঁয়াজ, রসুন, লবণ ও ডালের মতো নিত্যপণ্যের দাম কমেনি; বরং বেড়েছে রসুন ও ডালের দাম। নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে মাছ-মাংস এবং সবজির দাম।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2016, 03:10 PM
Updated : 29 April 2016, 04:55 PM

অবশ্য পারিজা, মিনিকেট আর বিআর আটাশের নতুন চাল আসায় চালবাজারে দেখা মিলেছে স্বস্তির। কেজিতে ৩-৪ টাকা করে কমতে শুরু করেছে এসব চালের দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু পণ্যের সরবরাহ কমে গেছে। মিল পর্যায়েও কিছু পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। সবমিলে ‘সাধারণ চাল’ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।  

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের মতোই প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, প্যাকেট লবণ ৩৫ টাকা ও সুগন্ধি চাল ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আর গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, দেশি মসুর ডাল ১৫০ টাকায়, আমদানি করা মসুর ডাল ১০০ থেকে ১৩০ টাকায় ও মুগ ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টানা তিন দিনের সরকারি ছুটি থাকায় শুক্রবার ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল বেশ কম। এতে কারওয়ান বাজারের খুচরা ও পাইকারি সবজির দোকানগুলোতে কিছুটা কম মূল্য দেখা গেলেও কিছু দূরে হাতিরপুল বাজারের চিত্র ছিল উল্টো।

সেখানে গত সপ্তাহের চেয়ে ২/৩ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছিল শাক-সবজি। প্রতি কেজি ফার্মের মুরগি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছিল ১৬০ টাকায়।

৪৪০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করছিলেন বাজারের এক দোকানের বিক্রেতা বশির উল্লাহ।

বাড়তি দামের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবছরই এমন সময়ে গুরুর মাংসের বাজার একটু চড়া হয়। চারদিকে অনুষ্ঠান থাকে। কিন্তু গরুর সরবরাহ কিছুটা কম থাকে।

এসব কারণে দাম আরেকটু বাড়তে পারে বলে মনে করেন হাতিরপুল বাজারের এই মাংস বিক্রেতা।

এই বাজারে এদিন গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছিল শাক-সবজি।

দোকানিরা প্রতি কেজি বরবটি ও ঝিঙা ৩৫ টাকা, করলা ও টমেটো ৩০ টাকা, বেগুন ও চিচিঙ্গা ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন। কিছুটা বেশি ছিল লালশাক, ডাটা শাক, পাটশাকসহ অন্যান্য শাকের দামও।

শাক-সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকার করেন এই বাজারের বিক্রেতার জসিম উদ্দিন।

এদিন কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি পটল, চিচিঙ্গা ও টমেটো ২০ টাকা, করলা ও ঢেঁড়শ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আলু ছিল আগের মতোই মানভেদে ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজি।

তবে ফার্মের মুরগির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। এদিন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছিল ১৫০ টাকায়। পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছিল প্রতিটি ২৫০ টাকা।

ঢাকার সবচেয়ে বড় এই বাজারে মাছের সরবরাহ কমে গেছে বলে জানান মাছ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, শুকনো মৌসুমে খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চল থেকে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। অধিকাংশ চাষের মাছ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের ওই অঞ্চল থেকেই ঢাকায় আসে।

সামুদ্রিক মাছের সরবরাহও কম বলে মনে করছেন আরেক বিক্রেতা আব্দুল কাদির। তার মতে, ‘সিন্ডিকেটের’ কারণে কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে সামুদ্রিক মাছের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

“৬-৭টায় কেজি হয় এমন আকারের রূপচাঁদার কেজি কিছুদিন আগেও ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। এখন সেগুলো এক হাজার টাকার বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ থেকেই সামুদ্রিক মাছের দাম বাড়তি,” বলেন এই বিক্রেতা।

কারওয়ান বাজারের খুচরা ও পাইকারি চাল বিক্রেতা এমএ রায়হান জগলু জানান, গত কয়েক মাস ধরে চালের বাজার বেশ স্থিতিশীল। নতুন কিছু ধান বাজারে আসায় সেগুলোর চালের দাম কমেছে।

প্রতি কেজি মিনিকেট ৪৬ টাকা থেকে কমে ৪৪ টাকায় এবং বিআর আটাশ ৩৮ টাকা থেকে কমে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সব জায়গায় নতুন চাল পৌঁছায়নি জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে চালের দাম আরও কিছুটা কমতে পারে।