বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
Published : 16 Mar 2016, 05:15 PM
বুধবার সচিবালয়ে মোবাইল অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন বিষয়ক এক বৈঠকে শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নাগরিকদের আঙুলের ছাপ নিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৪ মার্চ দিন রেখেছে আদালত।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরপেক্ষতা লঙ্ঘিত হতে পারে- এই আশঙ্কা থেকে রিট করার কথা জানিয়েছিলেন রিটকারীর আইনজীবী মুক্তাদির রহমান।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, “অপপ্রচার ও গুজবের ভিত্তিতে কোন মামলা হলে তার মেরিট থাকে না। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন চলছে এবং চলবে।
“সময়মতো আমরা আদালতে হাজির হবো এবং আঙুলের ছাপ নিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর যুক্তি আদালতে উপস্থাপন করা হবে।”
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কোনোভাবেই আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হচ্ছে না জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, “একটি বিশেষ মহল এই অপপ্রচার চালাচ্ছে যারা অবৈধ ভিওআইপি, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কাজ করছে।
“যা করছি জনস্বার্থে করছি, অনেকের আঁতে ঘা লাগবে সেটা জেনেও শুরু করেছি।”
এ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন ও ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, “একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই অপপ্রচার (আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হচ্ছে) চালাচ্ছে, যারা মূলত অবৈধ ভিওআইপি ও সন্ত্রাসী কাজে যুক্ত।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, “ওই যন্ত্রে আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করার কোনো প্রযুক্তি নেই। আঙুলের ছাপ নিয়ে সিম নিবন্ধন করা হচ্ছে তা শুধু অনলাইনে যাচাই করা হচ্ছে, এনআইডি ডাটাবেজ থেকে কোনো তথ্য বের হয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই।”
বিটিআরসির মহাপরিচালক মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “যে পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে সেখানে কোনোভাবেই তা সংরক্ষণ করার উপায় নেই। এটি শুধু অনলাইনে ভেরিফাই হচ্ছে।”
অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বলেন, “এ বিষয়ে প্রতিটি অপারেটর ১০০ কোটি টাকার মত বিনিয়োগ করেছে। অপারেটররা এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে চায়।”
অপারেটর রবির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহেদ আলম বলেন, “গত ২০ বছর ধরে মোবাইল ফোন অপারেটররা গ্রাহকের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে, সব দেশেই তা করে থাকে। প্রায় ৩৬ ধরনের তথ্য থাকে অপারেটরদের কাছে।
“কিন্তু কোনো প্রশ্ন উঠেনি অপারেটরদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত কোন ডাটা চুরি হয়েছে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া বিতর্কিত করার জন্যই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
“অপারেটররা যে ডাটা সংরক্ষণ করে তা শুধু গ্রাহক যাচাই করার জন্য, আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণ করার কোনো কারণ নেই।”
এ সময় গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীব শেঠি, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস, এয়ারটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিডি শর্মা, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।