রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণে ‘আপত্তি নেই কারও’

মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার বিষয়ে অপর চার অপারেটর ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2016, 10:14 AM
Updated : 8 Feb 2016, 10:15 AM

সোমবার চার অপারেটরের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মার্জার ইস্যু নিয়ে প্রত্যেকটা অপারেটর মনে করে এটি কনজ্যুমারদের জন্য পজিটিভ। প্রত্যেকটা অপারেটর পক্ষে মতামত দিয়েছে, কেউ না করেনি।”

একীভূতকরণ নিয়ে আলোচনা করতে রোববার বেসরকারি অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী ও একমাত্র রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেয় বিটিআরসি।   

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বৈঠকে অংশ নেন বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, গ্রামীণফোনের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স মাহমুদ হোসেন এবং সিটিসেলের একজন প্রতিনিধি।

একীভূতকরণ একটি জটিল ইস্যু মন্তব্য করে বিটিআরসি প্রধান বলেন, “এখানে কিছু টেকনিক্যাল ইস্যু রয়েছে। স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) একটা বড় ইস্যু। মার্জারের ফলে স্পেকট্রাম বেশি হবে রবি-এয়ারটেলের।”

বর্তমানে রবির ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ এবং এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। একীভূত হওয়ার পর যা হবে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ, যা সব অপারেটর চেয়ে বেশী । 

শাহজাহান মাহমুদ বলেন, “আজকের বৈঠকের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল এরা (অপারেটররা) কি মনে করে, বা এদের উপরে কি ইমপ্যাক্ট হবে। সবাই পজেটিভ মনোভাব দিয়েছে।”

একীভূতকরণ নিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি গণশুনানি এবং চার অপারেটরের মতামত নিয়ে কমিশনে আলোচনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিটিআরসি একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করছে, ওই কমিটি এসব বিষয় সংযুক্ত করে কমিশনে উত্থাপন করবে।”

বৈঠকে উপস্থিত বিটিআরসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, একীভূতকরণ বিষয়ে চার অপারেটর ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও কিছু বিষয়ে বিটিআরসির অবস্থানও স্বচ্ছ করতে বলেছে।

“বিশেষ করে বিটিআরসির হাতে থাকা অব্যবহৃত টুজি ও থ্রিজি তরঙ্গ নিলাম একীভূতকরণের আগে হবে না পরে হবে, তা জানতে চেয়েছে অপারেটররা,” বলেন এই কর্মকর্তা।

বিটিআরসি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে একীভূতকরণ ও তরঙ্গ নিলাম প্রক্রিয়া একসঙ্গেই চলবে।

বিটিআরসির কাছে থাকা এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের অব্যবহৃত ১০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ এবং থ্রিজির ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিক্রির জন্য নিলামের কথা রয়েছে।

বৈঠকে চার অপারেটর একীভূতকরণে তরঙ্গ বরাদ্দে ভারসাম্য, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছে।

দুই অপারেটরের ব্যবসা একীভূত করতে ২৮ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর রবি আজিয়াটা লিমিটেড জানিয়েছে, একীভূত কোম্পানি রবি নামেই ব্যবসা চালাবে।

এই দুই কোম্পানি এক হলে তাদের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় চার কোটি, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন আছে সবার উপরে।

গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর দুই কোম্পানি থেকে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একীভূত করার সম্ভাবনার বিষয়ে একান্ত আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতি এয়ারটেল; তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল।

এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।