স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় সাংবাদিক মুকুল কারাগারে

নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রীর করা মামলায় একদিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই গাজী টিভির বার্তা সম্পাদক রকিবুল ইসলাম মুকুলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

প্রধান অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 12:41 PM
Updated : 28 June 2015, 12:41 PM

সোমবার তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে নেওয়া হলে ঢাকা মহানগর হাকিম আমিত কুমার দে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

স্ত্রী নাজনীন আকতার তন্বীর করা মিরপুর থানার নারী নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তারের পর শনিবার তাকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

রিমান্ড শেষে সোমবার তাকে আদালতে পাঠানোর কথা থাকলেও রোববারই তাকে আদালতে নেয় পুলিশ। তার পক্ষে কোনো জামিনের আবেদন না থাকায় শুনানি না করেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।  

এ বিষয়ে মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রিমান্ডে তার কাছ থেকে যে সব তথ্য পাওয়ার কথা তা পাওয়া গেছে। এজন্যই তাকে আর না রেখে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”

ফাইল ছবি

মুকুলের স্ত্রী নাজনীন আকতার তন্বীও একজন সাংবাদিক। তিনি দৈনিক জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এই দম্পতির এক সন্তান রয়েছে। দুবছর আগে তাদের আরেক সন্তান চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর শোকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন তন্বী। 

মিরপুর থানায় করা মামলায় তন্বী অভিযোগ করেছেন, এক ব্যাংকারের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর তার উপর নানা নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন মুকুল।

প্রথম সন্তান চন্দ্রমুখী অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার উদ্যোগও মুকুল নেয়নি বলে তার অভিযোগ।

“সব কষ্ট নীরবে সয়ে আমি মেয়ের সঙ্গে চিরতরে চলে যেতে চেয়েছিলাম। আমি আমার চন্দ্রমুখীকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিলেও আল্লাহতায়ালা আমার জীবন ফিরিয়ে দেন।”

তখন চিকিৎসার জন্য কয়েক মাস হাসপাতালে থাকার সময় মুকুল ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে তন্বীর দাবি।

তিনি বলেন, “ডাক্তারের পরামর্শে আমি আবার অন্তঃস্বত্ত্বা হলে আমার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে।”

নির্যাতনের কারণে অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় হাসপাতালে যেতে হয়েছিল বলেও তন্বীর অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক হিসেবে পূর্বাচল থেকে পাওয়া প্লটও না জানিয়ে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে মুকুল।

“ওই জমির মূল্য পরিশোধে এক টাকাও মুকুল দেয়নি, আমার বিভিন্ন সময়ে পাওয়া পুরস্কারের টাকা ও আমার বড় বোনের স্বামীর কাছ থেকে নেওয়া ১৪ লাখ টাকা দিয়ে কেনা।”

তন্বী অভিযোগ করেন, যকৃৎ অকার্যকর হওয়ার পর ছয় বছরের চন্দ্রমুখীর চিকিৎসার জন্য তখন জমিটি বিক্রি করতে চাইলেও মুকুল রাজি হয়নি। ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের পর এখন তা বিক্রি করেছে। 

নানা নির্যাতনের পরও সন্তানের দিকে তাকিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে এতদিন কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে জানান তন্বী।

“এখন পারিবারিক-সামাজিকভাবে চেষ্টা করেও কোনো লাভ না পাওয়া সন্তানের নিরাপত্তার দিকে তাকিয়ে আমি এখন সুষ্ঠু বিচার চাই,” বলেন তিনি।