ঢাকার একটি কলেজের ১১ জন অফিস সহকারীকে (এমএলএসএস) পোলিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ার পর তাদের ভোটের দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
Published : 17 Apr 2015, 06:12 PM
পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য তালিকায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নাম দিয়ে ‘বিভ্রান্তি সৃষ্টি করায়’ কলেজ অধ্যক্ষকে কারণ দর্শাতে বলেছেন তিনি।
আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনের করা পোলিং অফিসারদের তালিকায় মিরপুরের হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে ওই ১১ জন অফিস সহকারীকেও রাখা হয়েছিল।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে চিঠি পাঠিয়ে অন্যদের সঙ্গে ওই ১১ জনকেও মিরপুরের পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।
কিন্তু নিজেদের শুধু ‘অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন’ দাবি করে ওই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনে ধর্না দিতে শুরু করেন ওই ১১ জন। কমিশনে দেওয়া আবেদনে নিজেদের দারোয়ান, নৈশপ্রহরী, মালী, সুইপার, আয়া, পিয়ন ও ঝাড়ুদার পরিচয় দিয়ে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে রেহাই চান তারা।
কলেজ অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনও মত দেন, শিক্ষাগত যোগ্যতার বিবেচনায় ওই ১১ জনকে দিয়ে ভোটের কাজ করানো ‘কষ্টকর’ হবে।
ফলে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পাওয়া ওই ১১ জনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও বিড়ম্বনায় পড়ে যান। এই নিয়োগে আইনগত কোনো বাধা না থাকলেও পদমর্যাদার প্রশ্ন নিয়ে তারা দ্বিধার মধ্যে পড়েন।
শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকালে আগারগাঁওয়ের কার্যালয়ে ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ওই ১১ জনকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, “একজন টিচারের সঙ্গে ফোর্থ ক্লাস কর্মচারী যাবে কিনা- আমরা এটা মেনটেইন করি। প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো তালিকায় সংশ্লিষ্টদের পদবী ছিল না। এটা তারই [কলেজ অধ্যক্ষের] ভুল। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বাদ দিয়েছি এবং উনাকে [কলেজ অধ্যক্ষকে] শোকজ নোটিস দিচ্ছি।”
এই বিড়ম্বনার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শাহ আলম বলেন, “সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্ভাব্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা পাঠায়। আমরা সিডি থেকে কপি করে পেস্ট করি দেই। সে হিসেবে কপিটা চলে গেছে। আমি যখনই জেনেছি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করে দিয়েছি। তাদের পরিবর্তে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি।”
অন্যদিকে কলেজ অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন বলছেন, কমিশন তাদের কাছে তালিকা চেয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদবী চায়নি।
“ভুলক্রমে শিক্ষকদের পাশাপাশি অফিস সহকারীদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এটা ইনটেনশনালি করা হয়নি।”
আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট হবে। ভোটে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে প্রায় অর্ধ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন।
উত্তরের ১৮ হাজারেরও বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে নিয়ে শনিবার থেকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান।