মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের দাফন শেরপুরের মাটিতে করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তার স্ত্রীর বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ নুরল ইসলাম হিরু।
Published : 22 Feb 2015, 08:13 PM
হিরু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের রিভিউ হলে এবং এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা করলে আশা করা যায় ফাঁসির আদেশ বহাল থাকবে।
ফাঁসি কার্যকরের পর কোনো অবস্থাতেই শেরপুরের মাটিতে ওই ‘কুলাঙ্গার’ ও কুখ্যাত আল বদর কামারুজ্জামানের লাশ দাফন করতে দেওয়া হবে না।
এজন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব মহলকে নিয়ে মিছিল, মিটিং, মানববন্ধনসহ যা যা করা দরকার সবকিছুই করা হবে। প্রয়োজনে হরতালও করা হবে।
এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের এই আত্মীয় (আবু সালেহ নুরল ইসলাম হিরু) রোববার জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এ ব্যাপারে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন।
শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি নুরল ইসলাম হিরু বলেন, “কামারুজ্জামান আমার ঘনিষ্ট আত্মীয়। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমরা মাঠে ময়দানে, রাজপথে, সংসদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি।
“আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বললে হবে না। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি এবং লালন করি। সে অনুয়ায়ী আমি এবং আমার পরিবার তথা স্ত্রী ছেলে মেয়ে একই আদর্শে দীক্ষিত।”
তিনি জানান, ১৯৭৭ সালে অগ্রণী ব্যাংকে তার চাকরি হয়। ১৯৭৯ সালে ঈদের ছুটিতে তিনি কর্মস্থল বগুড়া থেকে শেরপুর এসে জানতে পারেন তার একমাত্র বোন নুরুন্নাহারের সঙ্গে কামারুজ্জামানের বিয়ে হচ্ছে।
তখন তিনি তার মাকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়েও এ বিয়ে বন্ধ করতে পারেননি বলে জানান।
এ কারণে তিনি ওইদিনই শহরের গোয়াল পট্টিতে এক ঘনিষ্ঠ জনের বাসায় রাতযাপন করে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই বগুড়ায় কর্মস্থলে চলে যান।
ওই বিয়ের পর নিজের পরিবারের সঙ্গে তার (হিরুর) সম্পর্ক সম্পূর্ণ চ্ছিন্ন হয়। শুধু সবার ছোট ভাই, যিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন, তার সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথাবার্তা হয় বলে জানান তিনি।
কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হলে শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ তথা গোটা বাংলাদেশ এই কলঙ্কের দায় থেকে মুক্তি পাবে, বলেন হিরু।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা হিরু আল বদর কমারুজ্জামানের লাশ শেরপুরে কবর দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন।
এছাড়া বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা আইনশৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় তিনি কামারুজ্জামানের লাশ শেরপুরের মাটিতে দাফন করতে না দেওয়ার ঘোষণা দেন।