খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের পথ আটকে থাকা পুলিশের গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে ৩ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে চলে আসা ‘অবরুদ্ধ অবস্থার’ অবসান ঘটল এবং দৃশ্যত ওই কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
Published : 19 Jan 2015, 06:12 AM
রোববার মধ্যরাত পেরিয়ে আড়াইটার দিকে ঢাকার অভিজাত এই এলাকার ৮৬ নম্বর সড়ক থেকে পুলিশের জলকামানের গাড়ি ও দুটি ভ্যান সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রত্যাহার করা হয় বাড়তি পুলিশ।
এরপর গুলশান-২ এর ওই সড়কটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়, ওই সড়কের ৬ নম্বর বাড়িটি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে এখন মাত্র তিন-চার জন পুলিশ সদস্য আছেন।
দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “৮৬ নম্বর সড়ক এখন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত। ”
পুলিশি ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়ার পর ওই কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থানরত খালেদার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ম্যাডাম (খালেদা) দোতলায় আছেন। এখন গভীর রাত। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।”
খালেদা জিয়া কখন বাসায় যেতে পারেন বা পরবর্তী কর্মসূচি কী হতে পারে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
৩ জানুয়ারি রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে খালেদা জিয়ার পথ আটকায় পুলিশ। বালির ট্রাক এনে আটকে দেওয়া হয় ৮৬ নম্বর সড়ক।
দুদিন পর নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবসের কর্মসূচি পালনে খালেদা বের হওয়ার প্রস্তুতি নিলে বাইরে থেকে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশি বাধায় কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে সারা দেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন বিএনপি প্রধান।
পরে তালা খুলে নেওয়া হলেও কার্যালয়ের সামনে পুলিশের দুই স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি বড় লরি ও জলকামান রাখা হয়। দুই প্রান্তে ব্যারিকেডে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়ার এ দিনটি তার স্বামীর জন্মদিন।
জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীতে থাকা অবস্থায় ১৯৭৮ সালে তার তত্ত্বাবধানেই বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়। বেঁচে থাকলে সোমবার তার বয়স হতো ৭৯ বছর।
তিন তারকা জেনারেল হিসেবে সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে নিহত হন।
গত ১৫ দিন ধরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ওই কার্যালয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ কয়েকজন মহিলা নেত্রী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ কাইয়ুম, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুব আল আমীন ডিউ, নিরাপত্তা সমন্বয়কারী আবদুল মজিদ, মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার ছিলেন।