সাংসদ হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি মিন্টু সোহেল হেলাল

খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় সংঘর্ষ এবং এক সাংসদের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2014, 05:23 AM
Updated : 25 Dec 2014, 09:06 AM

এর মধ্যে নেত্রকোনা-১ আসনের সাংসদ ছবি বিশ্বাসের গাড়ি পোড়ানো ও তাকে আহত করার ঘটনায় আনা হয়েছে  ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ।

এ মামলার আসামির তালিকায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আওয়াল মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারি হেলাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের নামও এসেছে।

শাহবাগ থানায় দায়ের করা এ মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০/৬০ জনকে আসামি দেখিয়েছেন নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক সাহেব আলী।

শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংসদ সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ, জখম, গাড়িতে অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর ও নগদ অর্থ ও মোবাইল চুরি এবং সরকারি কাজে বাধা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর মামলার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।”

তিনি জানান, ২৩ আসামির মধ্যে আটজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আসামির তালিকায় সোহেল ও হেলালসহ ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের নাম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগের ওসি সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, মিন্টুর বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় প্ররোচণার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে বকশীবাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় চকবাজার থানায় দায়ের করা মামলায় ৭০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০/৪০ জনকে আসামি করেছেন উপ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন।

চকবাজার থানার ওসি আজিজুল হক জানান, এ মামলায় পুলিশের ওপর মালার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। আসামির তালিকায় বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবারই চকবাজরের পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে বলে জানান ওসি।

বুধবার দুপুরে বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রাতে রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে ৩০ জন, শাহবাগে ১৮ জন ও চকবাজার থেকে ছয়জনকে আটক করার কথা জানিয়েছিল পুলিশ।

 

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার হাজিরার দিন থাকায় বুধবার সকাল থেকেই বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের অস্থায়ী আদালত সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয় বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী। দুপুরে সরকার সমর্থক একদল তাদের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ লাঠিপেটা, রবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিপেটায় অর্ধশতাধিক আহত হন।

এক পর্যায়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের ওপর হামলা চালিয়ে তার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।  সাংসদ নিজে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

এই সংঘাতের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, ছাত্রলীগ সভাপতি এ এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। আর তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে আক্রমণ। 

অন্যদিকে পুলিশ বিএনপিকর্মীদেরই এই সংঘাতের জন্য দায়ী করেছে।