দুর্ঘটনায় দুই জওয়ানের মৃত্যুর পর বিজিবির লাঠিপেটা-গুলি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ট্রাকচাপায় দুই জওয়ানের মৃত্যুর পর ঘ্টনাস্থলের আশপাশের প্রায় ৩০টি দোকানে ভাংচুর ও স্থানীয়দের লাঠিপেটা করেছে বিজিবি সদস্যরা।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2014, 02:51 PM
Updated : 28 Nov 2014, 08:00 PM

শুক্রবার বিকালে নবাবগঞ্জ উপজেলার রাজারামপুরের এ ঘটনায় বিজিবি সদস্যদের গুলিতে তিনজন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানালেও পুলিশ একজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।

ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিকাল ৪টা থেকে ঘটনাস্থলের পাশে ভিমলপুরে দিনাজপুর-ফুলবাড়ী সড়ক অবরোধ করে। এতে ফুলবাড়ীর সঙ্গে দিনাজপুর, বিরামপুর ও গোবিন্দগঞ্জসহ সারা দেশের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে বেলা ২টার দিকে রাজারামপুর এলাকার শান্ত-কান্ত রাইস মিলের সামনে দুর্ঘটনায় নিহত হন বিজিবি-২৯ ব্যাটালিয়নের ফুলবাড়ী ক্যাম্পে কর্মরত আল আমিন (২০) ও রুবেল হোসেন (২১)।

ফুলবাড়ী থানার ওসি রেজাউল ইসলাম জানান, ফুলবাড়ী উপজেলায় একটি মোটরসাইকেল ও কিছু ফেনসিডিল জব্দ করার পর ওই মোটরসাইকেল চালিয়ে আমিন ও রুবেল ক্যাম্পে যাওয়ার পথে শান্ত-কান্ত রাইস মিলের সামনে বিপরীতমুখী একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে দুজনেই আহত হন। তাদের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার পর চালক ও তার সহকারী ট্রাক ফেলে পালিয়ে যায়।

এর পরই ঘটনাস্থলের অদূরে বিজিবি ২৯ ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তরের সদস্যরা কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলের পাশে ভিমলপুর নামক স্থানে এসে দোকান-পাটে ঢুকে লোকজনকে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করে বলে স্থানীয় দোকানদার তরিকুল ইসলাম ও হাসান আলী অভিযোগ করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত লোকজন লাঠিপেটা ও দোকান ভাংচুরের প্রতিবাদ করলে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোড়ে বলে জানান তারা।

এতে আবুল হোসেন, আবিউল হোসেন ও মজিদুল ইসলাম নামে তিন জন গুলিবিদ্ধ হন। আবিউল ও মজিদুলকে ফুলবাড়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও আবুল হোসেনকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা জানিয়ে ওসি রেজাউল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

তবে স্থানীয়দের পেটানোর কথা অস্বীকার করে সেখানে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজিবি।

বিজিবির দিনাজপুর সেক্টরের জি-টু মেজর রবিউল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ট্রাকের ধাক্কায় বিজিবির দুই সৈনিক নিহত হওয়ার পর তাদের উদ্ধারের সময় স্থানীয় লোকজন বিজিবির জব্দ করা ফেনসিডিল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

“এতে বাধা পেয়ে তারা ইট-পাথর ছুড়লে এক বিজিবি সদস্য আহত হন।  তখন তার হাতের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সাত রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।”

হাসপাতালে নিহত বিজিবি সদস্যদের লাশ নেওয়ার সময়ও সেখানে লোকজন হামলা করার চেষ্টা করে বলে দাবি করেন বিজিবির এই কর্মকর্তা।

“হামলার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী সুপার পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে বিজিবি কর্মকর্তাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসেন,” বলেন তিনি।