কোটালীপাড়ার ৪৬৩ ‘মুক্তিযোদ্ধার’ ভাতা বন্ধের নির্দেশ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ৪৬৩ জনের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 05:07 AM
Updated : 23 Nov 2014, 05:07 AM

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার হাজি সরদার আ. মালেকের করা আবেদনে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মুহাম্মদ নূর আলম এ আদেশ দেন।

কোটালীপাড়া ৫৫২ জন সম্মানি ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৬৩ জনকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার হাজী সরদার আ. মালেক চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেন।

কোটালীপাড়া উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র চৌধুরী জানান, "ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় গত ৩ নভেম্বর ৪৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠিটি বৃহম্পতিবার আমরা হাতে পেয়েছি।"

৪৬৩ জনের এ তালিকায় কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. সামচুল হক, ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ, উন্নয়ন কর্মী আশালতা বৈদ্য, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী অনিল কুমার দের নাম রয়েছে।

সরদার আ. মালেক বলেন, "কোটালীপাড়ায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। যা যাচাই করা প্রয়োজন। এ কারণে এ ধরনের আবেদন করেছি।"

তবে কোটালীপাড়ার ভাতাপ্রাপ্ত কোন মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া নন বলে দাবি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীরবিক্রম।

তিনি বলেন, "আমার জানামতে কোটালীপাড়ার ভাতাপ্রাপ্ত কোন মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নন।"

এদিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্দেহের তালিকায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. সামচুল হকের নাম অন্তর্ভুক্ত করায় বর্তমান কমান্ডারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সাবেক কমান্ডার মো. সামচুল হক বলেন, "বর্তমান কমান্ডার হাজি সরদার আ. মালেক নির্বাচিত হওয়ার আগের তিন বছর আমি মুক্তিযোদ্ধাদের ভোটে নির্বাচিত কমান্ডার ছিলাম। আমাকে যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে তবে সে নিজেই ভুয়া। সেটিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।"

তালিকায় থাকা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী অনিল কুমার দে বলেন, "স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে আমার নিজের কন্ঠে ২২টি গান করেছি। আমার কাগজপত্র দেখে সরকার আমাকে ভাতা দিচ্ছে। এখন কেউ যদি আমাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে, তার চেয়ে পরিতাপের বিষয় আর নেই।"