মোবাইল ফোনের টাওয়ার স্থাপনে বিধি প্রণয়নের দাবি

যত্রতত্র মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন বন্ধে বিধি প্রণয়নের পাশাপাশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মোবাইল ফোনের ছাড়পত্র দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবিদ ও গবেষকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2014, 12:51 PM
Updated : 18 Nov 2014, 12:51 PM

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার কোয়ালিশন অব লোকাল  এনজিওস (সিএলএনবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক টাওয়ার ও মোবাইল ফোন থেকে নির্গত তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের মারাত্মক প্রভাব পড়ছে পরিবেশ ও মানবদেহে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশে মোবাইল ফোন থেকে নির্গত তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের নেতিবাচক প্রভাবের নানা বিষয় তুলে ধরেন গবেষকরা।

লিখিত বক্তব্যে সিএলএনবির চেয়ারম্যান হারুনূর রশিদ বলেন, মোবাইল ফোন এবং টাওয়ার থেকে অবিরত নির্গত হচ্ছে তড়িৎ-চুম্বকীয় বল। নির্গত হওয়া এ নন-আয়নাইজড রেডিয়েশন এক ধরনের তাপ সৃষ্টি করে, যা মাইক্রোওভেনের মত। এই রেডিয়েশন শরীরের জীব কোষ পুড়িয়ে দেয়। 

এছাড়াও মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণের ফলে পরিবেশের সংস্কার অযোগ্য ক্ষতি হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, টাওয়ার থেকে রেডিয়েশনের ফলে বছরে একবার বা দুইবার প্রজনন সক্ষম প্রাণী- কাঠবিড়ালী, বাদুড়, পাখি, ময়না, ইষ্টিকুটুম, মাছরাঙা, টুনটুনি, শালিক, দোয়েল, বাবুই, কাক, ফিঙ্গে ও বুলবুলি প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এসব প্রাণী প্রজনন ক্ষমতা  হারাচ্ছে এবং পাখিদের ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে এবং গাছগাছালির রোগ বালাই বেড়ে গেছে। 

এ অবস্থায় দ্রুত স্পেসিফিক অ্যাবজরশান রেট (এসএআর)  নির্ণয় এবং মোবাইল টাওয়ার স্থাপনে পরিবেশ এবং বিটিআরসি ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক করার দাবি করেন গবেষকরা।

এছাড়া মোবাইল ফোন থেকে অতিমাত্রার বিকিরণ চিহ্নিত করতে পাওয়ার ইনটেনসিটি ওয়াট/কেজি নির্ধারণের পর পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়ারও দাবি জানানো হয়।

এক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে ট্যাগ লাগানো বা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লেখার প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

এছাড়া মোবাইল টাওয়ার স্থাপনে নিউট্রালাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর সংশোধনী এবং এসব ক্ষেত্রে বক্তারা পরিবেশ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী বিধি প্রণয়ণ এবং ছাড়পত্র দেওয়ার দাবি তোলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কথা বলেন, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী মো. এনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও প্রশিকার পরিচালক নার্গীস জাহান বানু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল সরকার, এইএসএলের সহকারী পরিচালক পরমা জাহান, পরিবেশ বিজ্ঞানী মাসুদ গাজী, গবেষক ও দার্শনিক আবু মহি মুসা প্রমুখ।