ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচার কার্যক্রমে সাক্ষ্য দিতে তার বাবা নুরুল ইসলাম নুরু রোববার ভারত যাচ্ছেন বলে বিজিবি জানিয়েছে।
Published : 14 Nov 2014, 05:11 PM
তার সঙ্গে যাবেন একজন বিজিবি কর্মকর্তা ও একজন আইনজীবী।
বিজিবির ৪৫ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কোর্টের নিদের্শনা অনুযায়ী শুধু ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরুর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
সোমবার সকাল ১০টায় তাকে ওই আদালতে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত সরকার।
এজন্য তিন সদস্যের একটি টিম রোববার সকালে কুড়িগ্রাম বিজিবির সদর সপ্তর থেকে বুড়িমারী চেকপোস্টের উদ্দেশে রওয়না হওয়ার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান।
এ তিন সদস্য হলেন তিনি নিজে (লে. কর্নেল মোফাজ্জাল হোসেন আকন্দ), ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে তাদের যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও শেষ মুহূর্তে তা পেছানোয় আর যাওয়া হযনি।
অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচার কার্যক্রম কোচবিহারের বিএসএফ সেক্টর সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে শুরু হয় গত ২২ সেপ্টেম্বর।
ওই সময় আদালতের কার্যক্রম চলে তিন দিন।
আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের ৪৫ বিজিবির সদর দপ্তর থেকে ভারতের পথে রওয়না হন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু, বিজিবির ৪৫ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মোফাজ্জাল হোসেন আকন্দ ও কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন।
কিন্তু যাওয়ার পথে লালমনিরহাটের বড়বাড়ি এলাকায় পৌঁছানোর পর মোবাইল ফোনে তাদের জানানো হয় আদালত তিন দিনের জন্য মুলতবি হয়ে গেছে। পরবর্তীতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ও তারিখ জানানো হবে।
আব্রাহাম লিংকন জানান, শুক্রবার বিকালে বিজিবির পক্ষ থেকে আবার সাক্ষ্য দিতে ভারত যাওয়ার কথা জানানো হয়। তারা এখন যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, “অনেক দিন পর ডাক পাইলাম। আগেরবার বিচারের নামে ওরা তামশা করছিল। আশা করি, এবার ন্যায় বিচার পামু।”
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ফেরার সময় ভারতের চৌধুরীহাট বিএসএফ ক্যাম্পের এক সদস্য ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ এ গুলি চালান বলে অভিযোগ করা হয়।
এ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক হইচই হয়। ঘটনার দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ অগাস্ট ভারতের কোচবিহার জেলার সোনারী এলাকায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে এ হত্যার বিচার শুরু করা হয়।
ওই বিচারে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।
ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে ফেলানী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে আবেদন করেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু।