কমিটি বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ না মেনেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
চাকরি বিধিমালাসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষক-চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়াকে ইউএসটিসির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া ২০১১ সালে অবসরের পর তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট নার্সিং কলেজে রোগতত্ত্ব ও রিসার্চ মেথডলোজি বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন।
২০১০ সালে প্রণীত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে বলা হয়েছে, উপাচার্য পদে নিয়োগ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ গবেষণা বা প্রশাসনিক কাজে মোট ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সংসদীয় কমিটির অভিযোগ, আইনের এই ধারার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ইউএসটিসির উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া স্বীকৃত কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন না।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীন বলেন, “মন্ত্রণালয় তথ্য গোপন করে উপাচার্য নিয়োগের ব্যবস্থা করেছে। রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল গেলে তিনি তো সই করবেনই। কিন্তু ফাইলেই যদি তথ্য গোপন করা হয়, তাহলে কিভাবে হবে?
“মন্ত্রণালয় এখন তাদের এই আইন পরিপন্থি কাজ সংশোধন করবে বলে জানিয়েছে।”
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সংসদীয় কমিটির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেডিকেল কলেজগুলো বহু আগে থেকেই বিভিন্ন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী মেডিকেল কলেজসহ আরো অনেক মহাবিদ্যালয় স্নাতক ও স্নাতোকত্তর ডিগ্রি দিচ্ছে।
মেডিকেল কলেজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত যেসব ইনস্টিটিউট-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে ৪ বছর বা তারও বেশি বছরের কোর্স পরিচালনা করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমান হিসেবে গণ্য করার প্রথা চালু রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিটিকে জানানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের জবাবের বিষয়ে আফছারুল আমীন বলেন, “আমাদের দেখতে হবে, আইন কী বলছে? যেটা করতে হবে সেটা আইনের ভেতরে থেকে করতে হবে।”
বৈঠকে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে প্রেষণে থাকা কর্মকর্তাদের তিন বছরের বেশি না রাখার সুপারিশের পাশাপাশি বিভিন্ন বোর্ডে কর্মরতদের আন্তঃবোর্ড বদলীর পরামর্শ দেওয়া হয়।
এছাড়া বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে এমপিওভুক্ত করতে নতুন নীতিমালা তৈরির পরামর্শও দেওয়া হয় বৈঠকে।
আফছারুল আমীনের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, মো. ছলিম উদ্দীন তরফদার, গোলাম মোস্তফা, এস এম আবুল কালাম আজাদ, মোহা. মামুনুর রশিদ এবং সেলিনা আক্তার বানু।