প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা-মাছ শিকারের তথ্যদাতাকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
Published : 23 Sep 2014, 10:33 PM
মঙ্গলবার হাটহাজারী উপজেলায় হালদা তীরবর্তী গড়দুয়ারা ড. শহীদুল্লাহ একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এক সচতেনতা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের ষোড়শ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘হালদা নদীর মা মাছ রক্ষায়’ এই সমাবেশ ও হালদায় রুই জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “নদী তীরের মানুষ এবং মৎস্যজীবীরা সচেতন হলেই কেবল হালদাকে রক্ষা করা সম্ভব।
“ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, তারা মাছের ডিম কম পাচ্ছেন। এর কারণ মা-মাছ শিকার। এতে সবারই ক্ষতি।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, “মা-মাছ ধরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নদীতে কেউ মাছ ধরলে সেটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেবে।
দেশের সম্পদ হালদা নদী রক্ষায় মা-মাছ শিকারিদের অবশ্যই শাস্তি দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জাফর আলম বলেন, “উজানে বাঁধ দেয়ায় হালদায় পানি প্রবাহ কমে যাচ্ছে। একে ‘পানি সঙ্কটাপন্ন’ এলাকা ঘোষণা করতে হবে। হালদা তীরে কোনো শিল্প ও প্রকল্প করতে হলে পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব আগে বিবেচনা করতে হবে।”
হালদা রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, “জাতীয় অর্থনীতিতে এ নদীর বার্ষিক অবদান প্রায় পাঁচশ কোটি টাকা। একটি ২০ কেজি ওজনের মাছ যে পোনা দেয় তার বাৎসরিক টার্নওভার চার কোটি টাকা।
“কাজেই এ নদীকে বাঁচাতে হবে। নদী বাঁচলেই তীরের মানুষ বাঁচবে। আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।”
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান পান্না বলেন, “অবস্থা হচ্ছে- বিচার মানি কিন্তু তাল গাছ আমার। মা-মাছ ধরা যাবে না, কিন্তু আমি পেলে ছাড়া যাবে না।
“এই মানসিকতা হলে নদীর ভারসাম্য নষ্ট হবেই। তখন আর কোনো কিছুতেই কোনো লাভ হবে না।”
হালদা রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চ্যানেল আইয়ের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি চৌধুরী ফরিদ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন, গড়দুয়ারা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ, শহীদুল্লাহ একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিমুল মহাজন ও নদীতে ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন।
সমাবেশ শেষে নদীতে প্রায় দেড় হাজার মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়।