সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী মিজানুর রহমানের মালিকানাধীন সানমুন গ্রুপ এতোদিন অবৈধভাবে ওই ফ্লোরগুলো দখল করে রেখেছিল।
৩০ তলা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল ওই গ্রুপের পত্রিকা দৈনিক বর্তমানের কার্যালয়।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (দক্ষিণ) নির্বাহী মেজিস্ট্রেট মোহাম্মদ অতুল মণ্ডলের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ‘অবৈধ দখল’ উচ্ছেদ করে ডিসিসি। এরপর পাঁচ ফ্লোরে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
সেখানে সিটি কর্পোরেশনের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হবে বলে ম্যাজিস্ট্রেট জানান।
ডিসিসির (দক্ষিণ) জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মতিঝিলে বহুতল ভবন সানমুন টাওয়ারের একতলা থেকে পঞ্চম তলার নিজস্ব মালিকানা বুঝে নিয়েছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (দক্ষিণ)।
“ওই পাঁচটি তলা সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন। সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সানমুন গ্রুপ ফ্লোরগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছিল না।”
সকালে সানমুন টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় দৈনিক বর্তমানের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানের সব আসবাব, কম্পিউটারসহ জিনিসপত্র খুলে এক জায়গায় জড়ো করে রাখা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী সম্পাদক নাসির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিটি কর্পোরেশনের লোকেরা সকালে এসে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে। হঠাৎ করে তো চাইলেও ভবন ছেড়ে চলে যাওয়া যায় না।তাই বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেছিলাম। তাতে কাজ হয়নি।”
এরপর প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় মালামাল ১৮ তলায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তিনি।
সানমুন টাওয়ার নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও এম আর ট্রেডিংয়ের মালিক মো. মিজানুর রহমানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ মার্চ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
শাহবাগ থানায় দায়ের করা ওই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ৮২৭ কোটি টাকা ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।
মঙ্গলবার ওই মামলায় খোকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও অনুমোদন করেছে দুদক। তবে মিজানুর রহমানসহ এজাহারের দুই আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হচ্ছে দুদকের প্রতিবেদনে।
মামলায় বলা হয়, ওই ভবনের প্রথম পর্যায়ে ৩ তলা পর্যন্ত নির্মাণের জন্য মেসার্স এম আর ট্রেডিংকে ঠিকাদার নিয়োগ করে ডিসিসি। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩ তলা এবং তৃতীয় পর্যায়ে কার পার্কিংসহ আরো ২০টি তলা নির্মাণের জন্যও তারা কাজ পায়।
এরপর ডিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত পুনর্মূল্যায়ন কমিটি ডিসিসিকে ৩০ শতাংশ এবং নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে ৭০ শতাংশ শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর নির্মাণ প্রতিষ্ঠান নিজস্ব টাকা ব্যয় না করে অগ্রিম অর্থ নিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রির মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শেষ করে। ডিসিসি নিজেই ওই পদ্ধতিতে নির্মাণ কাজ শেষ করে পুরো ভবনের মালিকানা রাখতে পারত বলে দুদক মনে করে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ডিসিসি তা না করে ওই সম্পত্তির (ভবন) বাজার মূল্য হিসাবে সরকারের ৮২৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে।