ঢাকায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট বিমসটেকের স্থায়ী সচিবালয়ের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 13 Sep 2014, 11:47 AM
শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশে কোনো আঞ্চলিক জোটের প্রধান কার্যালয় হিসেবে রাজধানীর গুলশানে বিমসটেকের এই সচিবালয়ের উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বিমসটেকের কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাত দেশের এই জোটের লক্ষ্য অর্জনে নিজের চিন্তাধারা তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
দারিদ্র্য বিমোচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষিতে সহযোগিতা, বিমসটেক মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল বিষয়ক কাঠামো চুক্তি কার্যকর এবং বিনিয়োগ সংরক্ষণ চুক্তি সম্পাদন, যোগাযোগ বৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বিমসটেক সচিবালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে বলে আশা করছে সরকার।
গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত জোটের সবশেষ সম্মেলনে ঢাকায় স্থায়ী এই সচিবালয় স্থাপনের বিষয়ে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়।
শ্রীলঙ্কাও এ সচিবালয় স্থাপনে আগ্রহী ছিল। কিন্তু জোটের প্রথম মহাসচিব শ্রীলঙ্কা থেকে করার ব্যাপারে সদস্য দেশগুলো একমত হয়।
শ্রীলঙ্কার কূটনীতিক সুমিত নাকান্দালা এরইমধ্যে জোটের প্রথম মহাসচিব হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মধ্যে দিয়ে জন্ম নেয় বাংলাদশ-ভারত-শ্রীলঙ্কা-থাইল্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন। পরে মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান যোগ দিলে এ জোটের নাম হয় বিমসটেক।
জোটের সদস্য দেশগুলো পারস্পরিক যোগাযোগ এবং বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর জোর দিলেও এখনও লক্ষ্য অর্জন থেকে পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
মিয়ানমার সম্মেলনের আগে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, এ জোটের তৎপরতা শুধু সম্মেলন আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের উদ্দেশে ২০০৪ সালে জোটের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার ব্যাপারে সম্মত হলেও সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, জোটের নীতিকাঠামো এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় একে কার্যকর করা যাচ্ছে না।
বিমসটেক এখন উন্নয়ন এবং অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১৪টি খাতের ওপর জোর দিচ্ছে।
এই খাতগুলো হচ্ছে- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, পর্যটন, মৎস্য, কৃষি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, দারিদ্র দূরীকরণ, সন্ত্রাসবাদ ও আঞ্চলিক অপরাধ দমন, এবং জলবায়ু পরিবর্তন।