এনসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগে বিরোধিতা মহিউদ্দিনের

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) বিদেশি অপারেটর নিয়োগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2014, 05:54 PM
Updated : 14 July 2014, 05:54 PM

সোমবার এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো এক ফ্যাক্স বার্তায় তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এনসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের ‘চক্রান্ত’ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সোমবার সন্ধ্যায় মহিউদ্দিনের একান্ত সচিব মুহাম্মদ ওসমান গণি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীকে ফ্যাক্স পাঠানোর পাশাপাশি এনসিটি বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অর্থমন্ত্রী, নৌ পরিবহন মন্ত্রী, বন্দর সচিব, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বন্দর চেয়ারম্যানকেও ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হয়েছে।

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো বার্তায় মহিউদ্দিন বলেন, ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বন্দরের তহবিল থেকে ৭৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এবং বন্দরের পরিচালনায় এনসিটি নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়।

“বিগত জোট সরবারের আমলে চক্রান্ত করে আগের অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বিদেশি প্রাইভেট অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়।”

মহিউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদের মুখে ২০০৬ সালে জোট সরকার এ সিদ্ধান্ত স্থগিত করে।

“পরবর্তীতে ১/১১ এর সরকার আবার বিদেশি অপারেটর নিয়োগের দরপত্র প্রস্তাব তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে। তখন টেন্ডার ডকুমেন্ট সংশোধন করতে গিয়ে নানা কেলেঙ্কারির জন্ম হলে তা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।“ 

সাবেক মেয়র বলেন, এসব বিষয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসায় তিনি বিদেশি অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার নির্দেশ দেন।

“একই সাথে একনেকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্দরের অর্থায়নে ও পরিচালনায় এনসিটির জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহের পুনঃ নির্দেশনা দেয়া হয়। যা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের ৬ মার্চ বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে।”

তিনি বলেন, ওই অনুসারে বন্দর কর্তৃপক্ষ এনসিটির জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করার পর গত ২ জুন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এক সভায় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পরিপন্থিভাবে আবার বিদেশি অপারেটর নিয়োগে মত প্রকাশ করে।

বন্দরের অন্যান্য বার্থের মত এনসিটির বার্থগুলোও দেশি অপারেটররা সফলভাবে পরিচালনায় সক্ষম বলে বার্তায় মত দেন মহিউদ্দিন।

তিনি বলেন, বিদেশি অপারেটর নিয়োগ হলে তারা একটানা ২৫-৩০ বছর বা আরো বেশি সময় এনসিটি পরিচালনা করবে। এতে এনসিটির ওপর বন্দরের কর্তৃত্ব লোপ পাবে। 

“ফলে সরকার যেমন বেকায়দার পড়বে তেমনি জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। বন্দরে দ্বৈত প্রশাসনের সৃষ্টি হবে।“

মহিউদ্দিন মনে করেন, এতে করে এনসিটি, চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ও জেনারেল কন্টেইনার বাথ এরমধ্যে অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশবাসী, বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী ও ব্যবহারকারীরা।

ফ্যাক্স বার্তায় মহিউদ্দিন বলেন, এনসিটির ভাটিতে নৌবাহিনীর মূল প্রতিরক্ষা স্থাপনা সমূহ এবং উজানে সিসিটি। এ অবস্থায় এনসিটি বিদেশি প্রাইভেট অপারেটর নিয়োগ পেলে উভয় প্রতিষ্ঠান মারাত্মক হুমকিতে পড়বে।

তাই এনসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের মহল বিশেষের চক্রান্ত বন্ধে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।