এই ঘটনা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী তাজুলের নাম উঠে এসেছে। তাজুল বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।
রোববার সংসদীয় তদন্ত কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিটির এখন পর্যন্ত যা দেখেছে, তাতে এবি তাজুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে না।
“নথিপত্র থেকে যেটা বোঝা যাচ্ছে, তা হলো-ক্রেস্ট দেয়া নিয়ে মাত্র দুটি বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন তাজুল ইসলাম। বিলেও তার স্বাক্ষর নেই।”
মন্ত্রণালয়ের অধস্তন কর্মকর্তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন সংসদীয় তদন্ত কমিটির এই সদস্য।
ইকবালুর রহিম আরো বলেন, “কমিটির আর একটি বৈঠক করে পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ চূড়ান্ত করতে পারে।”
ক্রেস্টে সোনা কম দেয়ার নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর গত ২৪ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তা তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আফসারুল আমিনকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই উপকমিটিতে ইকবালুর রহিম ছাড়াও সদস্য রয়েছেন গাজী গোলাম দস্তগীর।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও এনিয়ে তদন্ত করেছে। তাতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক সচিব মিজানুর রহমান ও বর্তমান সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকসহ ১৩ কর্মকর্তা ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে।
ওই বৈঠকে গঠিত উপকমিটির আবেদনে তদন্তের সময় আরো দেড় মাস বাড়ানো হয়।
রোববারে বৈঠকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ও সচিব মিজানুর রহমানের বক্তব্য শুনেছে কমিটি।
বৈঠকে উপস্থিত একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবি তাজুল এই ঘটনায় জড়িত নন বলে দাবি করেছেন। আর মিজানুর রহমানও কমিটির অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন।”
কমিটির বৈঠকে এবি তাজুল জানিয়েছেন, ক্রেস্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সব বিলেও তিনি সই করেননি। সচিব মিজানুর রহমানই বেশিরভাগ বিলে সই করেছেন।
তবে বৈঠক শেষে এবি তাজুল এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
এছাড়া সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় ‘তাড়াহুড়ো’ করে তদন্ত শেষ করেছে বলে মনে করছে কমিটি।
মন্ত্রণালয়ের তদন্ত শেষে গত ১০ জুন ক্রেস্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বনানীর এমিকনের মালিক মীর দাউদ আহমেদ ওরফে নাজিম এবং শান্তিনগরের মেসার্স মহসিনুল হাসানের মালিক মো. মোহসিনুল হাসানের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এনায়েতউল্লাহ খান বাদী হয়ে মামলা করেন।
এদিকে ক্রেস্টে দুর্নীতি’ নিয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদের আইনি নোটিসের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, বিষয়টি সংসদীয় উপকমিটির তদন্তাধীনে রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সরবরাহকারী কোম্পানিকে পরিশোধিত বিল পুনরুদ্ধার এবং নতুন ক্রেস্ট তৈরি করে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে বিদেশি বন্ধুদেরকে প্রদান করা ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।