বাংলাদেশে চলমান সহিংস পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই বলেছেন, বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
Published : 02 Dec 2013, 12:41 AM
এক বিবৃতিতে তিনি রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে বলেন, রাজনীতি বা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সহিংসতার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে রাজনীতিবিদরাও ছিলেন।
নাভি পিল্লাই জেনেভা ভিত্তিক জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের হাই কমিশনার।
নির্বাচন ঘিরে রাজপথে সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত ফার্নান্দেজ-তারানকোর সফরের ঠিক আগ মুহূর্তে রোববার এই বিবৃতি দেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা দেশকে বিপদজনকভাবে সংকটের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির জন্য দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের যুদ্ধংদেহি মনোভাবকে দায়ী করে সংঘাত থামানোর উদ্যোগ নিতে তাদের প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নাভি পিল্লাই বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃ্বৃন্দকে নিজেদের অনড় অবস্থানে ছাড় দিতে হবে।
“একদিকে বাসে বোমা মেরে মানুষ হত্যার ঘটনা দেখা যাচ্ছে, যা থেকে শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিরোধী দলের নেতাদের আটক হতে দেখা যাচ্ছে, যা বিরোধকে উস্কে দিচ্ছে।”
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই প্রধান দলের মুখোমুখি অবস্থানে গত কয়েকদিনে সংঘাত-সহিংসতায় ২০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানিতে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয় ওই বিবৃতিতে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধীদল বিএনপির বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যে নাভি পিল্লাইয়ের এই বিবৃতি এলো।
আগামী ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে ভোটের তারিখ রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড়। অন্যদিকে বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছে, তারা নির্দলীয় সরকার ছাড়া তারা অন্য কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
দুই দলের এই বিরোধপূর্ণ মনোভাবের মধ্যে গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে বান কি-মুনের দুটি চিঠিও তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব।
এরপরে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় প্রধান দুই নেত্রীকে চিঠি লেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, যাতে সঙ্কট সমাধানে সংলাপের আহ্বান জানানো হয়।