ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের এক নেতা নিহত হয়েছেন।
Published : 27 Oct 2013, 08:56 AM
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকা তিন দিনের হরতালের প্রথম দিন রোববার সকালে মিনার গ্রামে নগরকান্দা-ফরিদপুর সড়কে এই সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
হরতালকারীরা হামলা চালালে পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি ছোড়ে বলে নগরকান্দা থানার ওসি আব্দুল করিম দাবি করেছেন।
অন্যদিকে বিএনপি বলেছে, পুলিশ শান্তিপূর্ণ পিকেটারদের ওপর গুলি চালালে নিহত হন মারুফ হাসান (২৮)।
মারুফ স্বেচ্ছাসেবক দলের নগরকান্দা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সহসভাপতি বলে জানিয়েছেন সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুল হাসান পিঙ্কু দাবি করেছেন, মারুফ তার সংগঠন করতেন।
নিহতের খবরে ওই গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নগরকান্দা জঙ্গুরদী সেতু এলাকায় উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ঘিরে রেখেছে।
জেলা প্রশাসক মইনউদ্দিন আহমেদ দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব পাঠানো হয়েছে। বিজিবিও তলব করা হয়েছে।
“পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি ডাকা হয়েছে। যে কোনো সময় ঢাকা থেকে বিজিবি এসে যাবে।”
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাকও সংঘর্ষস্থলে গেছেন।
নিহত মারুফ মিনার গ্রামের রাজু শেখের ছেলে। বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর স্বজনরা লাশ নিয়ে যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আহতদের মধ্যে ফাতেমা (১৮) ও বদরুল (২২) নামে দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নগরকান্দা থানার এসআই খলিলও আহতদের মধ্যে রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরকান্দা বাজার সংলগ্ন মিনার গ্রামে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকশ’ নেতা-কর্মী আঞ্চলিক সড়কে মিছিল বের করে।
মিছিলকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নেয়। এতে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হরতাল সমর্থকদের ইটের জবাবে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ও রবার বুলেট ছোড়ে। এক পর্যায়ে গুলি চালায় পুলিশ।
নগরকান্দার ওসি আব্দুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা হলে প্রাণরক্ষা করতে পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি চালায়।”
তবে সংঘর্ষের জন্য পুলিশকে দায়ী করে স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা আহ্বায়ক জুলফিকার সাংবাদিকদের বলেন, পিকেটারদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশ গুলি চালায়।
গুলিবিদ্ধ মারুফ, ফাতেমা ও বদরুলকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মারুফ মারা গেছেন।
নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুনীল চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, ফাতেমা ও বদরুল হাতে ও পায়ে গুলি লেগেছে। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।