জাতীয় জাদুঘরে একটি দরপত্র জমা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ভাস্কর শ্যামল চৌধুরী।
Published : 16 Apr 2013, 04:08 PM
হামলার জন্য তিনি ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে দায়ী করলেও ওই নেতা ঘটনাস্থলে থাকার কথাই অস্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে ঘটনাটি না জানার কথা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জাতীয় জাদুঘরে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যান শ্যামল চৌধুরী, যার নির্মিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জাদুঘরের একটি শিল্পকর্ম তৈরির জন্য দরপত্র জমা দিয়ে তিনি জাদুঘরের উপরক্ষক (জনশিক্ষা বিভাগ) নীরু শামসুন্নাহারের কক্ষে যান। সেখানে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ারের নেতৃত্বে ১০/১২ জন তার ওপর চড়াও হয়ে তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে।
“ওই সময় ভাস্কর মুকুল মুৎসুদ্দী ও নীরু শামসুন্নাহার আমাকে উদ্ধার করতে এলে তাদেরও লাঞ্ছিত করে তারা।”
হামলার পর বিকাল পৌনে ৪টা পর্যন্ত জাদুঘর থেকে আর বের হননি শ্যামল। বিকালে বাইরে এসে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
হামলাকারীদের চিহ্নিত করার বিষয়ে শ্যামল বলেন, “তখন আমি এদেরকে চিনতাম না, পরে পরিচয় পেয়েছি।”
হামলার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারা দরপত্র জমা দিয়ে কাজটা নিতে চেয়েছিল। এই জন্য কয়েকদিন ধরে আমাকে হুমকি দিচ্ছিল।”
সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ হিসেবে জাতীয় জাদুঘরের ৯ নম্বর গ্যালারিতে তিমির কঙ্কালের প্যাডেস্টাল তৈরি, তৈলচিত্র অঙ্কনসহ বেশ কিছু শিল্পকর্ম তৈরির জন্য গত ২ এপ্রিল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিল দরপত্র জমা দেয়ার নির্ধারিত সময়।
ভাস্করের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রায় ৬ বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেয়া দেলোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার আছে এর আগে এক সাংবাদিক ফোনে বিষয়টা জানতে চেয়েছিল, তখনই আমি ঘটনাটি শুনি।
“সেখানে কী হয়েছে, কে কী করেছে, তা আমি জানি না,” বলেন তিনি।
দেলোয়ার জানান, তিনি জাদুঘরের পাশে গণগ্রন্থাগারে আড্ডা দিতে প্রায়ই যান, তবে মঙ্গলবার বাসা থেকেই বের হননি।
দেলোয়ার অস্বীকার করলেও জাদুঘরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনার সময় তিনি থানার বাইরে ছিলেন বলে বিস্তারিত জানেন না।
“তবে তারা যদি লিখিত অভিযোগ দেয় পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে,” বলেন তিনি।
শ্যামল জানান, তিনি তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশে অভিযোগ দেবেন।