মিছিলে পুলিশের ঝাঁঝালো গ্যাস, রঙিন পানি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বামপন্থী দলগুলোর হরতালে রাজধানীর পল্টন এলাকায় পেপার স্প্রে ও জল কামান নিয়ে মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2013, 10:14 PM
Updated : 16 Jan 2013, 10:45 PM

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ডাকে বুধবার সারা দেশে আধাবেলার এই হরতালে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও সমর্থন দিয়েছে।

ভোর ৬টায় হরতাল শুরুর পরপরই রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল শুরু করে বাম দালগুলো।

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, সিপিবি ও বাসদের নেতা কর্মী ও সমর্থকরা আলাদা মিছিল নিয়ে পুরান পল্টন মোড় থেকে জিপিও হয়ে প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মতিঝিল এলাকা থেকে বাম মোর্চার একটি মিছিল পুরানা পল্টন মোড়ে এলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাক বিতণ্ডা শুরু হলে পুলিশ ‘পেপার স্প্রে’ ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এরপর সিপিবি ও বাসদের নেতাকর্মীরা মিলে মিছিল নিয়ে পল্টন এলাকায় এলে পুলিশ আবারও পেপার স্প্রে ও জল কামান ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়।

এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

হরতালকারীদের মিছিল পুলিশের বাধার মুখে পড়ে শাহবাগ এলাকাতেও। সকালে মিরপুরেও মিছিল করেছে বাম দলগুলো।

হরতালের শুরু থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখা গেছে। প্রচুর রিকশা চললেও সকালে বাস চলাচল করেছে অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম।

গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ থেকে সকালে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। তবে ট্রেন চলেছে স্বাভাবিকভাবেই।  

গত ৩ জানুয়ারি ডিজেল পেট্রোল, অকটেন ও কেরোসিনের দাম লিটারে সর্বোচ্চ সাত টাকা পর্যন্ত বাড়ালে তার প্রতিবাদ জানায় বামপন্থী দলগুলো। দাম কমাতে সরকারকে সময় বেঁধে দেয় তারা।

তার মধ্যে দাম কমানো না হওয়ায় ৯ জানুয়ারি সিপিবি সভাপতি সেলিম রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সামনে সিপিবি-বাসদের ধরনা কর্মসূচি থেকে ১৬ জানুয়ারি হরতালের ঘোষণা দেন। 

একই দাবিতে একইদিন আলাদাভাবে হরতালের ঘোষণা দেন গণতান্ত্রিক বামমোর্চার সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

নতুন করে দাম বৃদ্ধির ঘোষণার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ বামপন্থী দলগুলোর।

মঙ্গলবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম এই হরতালে তার দলের সমর্থনের কথা জানান।

অবশ্য তাদের এই সমর্থনকে ‘রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক’ বলে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বামপন্থী নেতারা।

১৮ দলীয় জোটে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামীসহ ডানপন্থী দলগুলোকে রাখা নিয়ে বিএনপির সমালোচনা করে আসছে বামপন্থী দলগুলো। জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবিতে বামপন্থী দলগুলো গত ডিসেম্বরে হরতাল ডেকেছিল।

আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ৬ জানুয়ারি সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করে।