বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর পাঁচ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে মুক্তমত চর্চার পথটি মসৃণ করতে নীতিমালা তৈরির ওপর জোর দিয়েছেন এর প্রধান সম্পাদক। তার মতে, অবাধ মতপ্রকাশের সুযোগের অপব্যবহার রোধ জরুরি।
Published : 20 Dec 2011, 02:55 PM
গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে মতপ্রকাশে দায়িত্বশীল হতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
অনলাইনে সংঘটিত অপরাধ, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ধর্ম-বিদ্বেষ, জাতি বৈরিতা ও মানহানিকর কন্টেন্ট রোধ করতে ‘যৌক্তিক’ আইন প্রণয়নের দাবিও তুলেছেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্রের প্রধান বলেন, “এটা এক ধরনের অপরাধ, আর এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে সরকারকে অবশ্যই নতুন আইন করতে হবে।”
সম্প্রতি শীর্ষ পর্যায়ের এক রাজনীতিকও বিষয়টির অবতারণা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন,“তার সঙ্গে আমি একমত।”
গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রের সামষ্টিক ব্যর্থতার জন্য রাজনীতিকদের দোষারোপ করে তিনি বলেন, “নীতিনির্ধারক হিসেবে এ ব্যর্র্থতার দায় তাকেও নিতে হবে।”
মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর পাঁচ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের বর্তমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরার সঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমের নানা সঙ্কট ও সম্ভাবনাও মেলে ধরেন তিনি।
২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করা দেশের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পাঁচ বছরে দেশে সংবাদের নির্ভরযোগ্য উৎসে পরিণত হয়েছে।
প্রতি মাসে গড়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর চার কোটি পাতা পাঠকরা খোলেন। প্রতিদিন তিন লাখ আইপি অ্যাড্রেস থেকে খোলা হয় দ্বিভাষিক এই ওয়েবসাইট, অনেক দিন তা পাঁচ লাখে ওঠে।
উদ্ভাবনের পাঁচ বছরপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর র্যাডিসন হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের নীতি-নির্ধারকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর কার্যক্রম নাতিদীর্ঘভাবে উপস্থাপন করেন। বক্তব্যের পাশাপাশি স্থির ও ভিডিওচিত্রের মাধ্যমেও তা তুলে ধরা হয়।
বছরপূর্তির অনুষ্ঠানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর নতুন ওয়েবসাইটের পরীক্ষামূলক সংস্করণও প্রকাশ করা হয়। এটি উদ্বোধন করেন একাত্তরের নারী মুক্তিযোদ্ধা খুরশীদ জাহান বেগম।
দেশের বিজয়ের ৪০বছর পূর্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর বিশেষ আয়োজনের কেন্দ্রে ছিলেন খুরশিদ জাহান, যিনি সন্তান কোলে অস্ত্র হাতে নেমেছিলেন পাক হানাদারদের রুখে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে।
অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় তৌফিক ইমরোজ খালিদী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “দিনের প্রতিটি মুহূর্তে সংবাদ কক্ষ পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে বর্ষপূর্তির এই আয়োজনে আমি আপনাদের কাছে কিছু বিষয় তুলে ধরছি।”
সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি গণমাধ্যম পরিচালনার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট একটি নীতিমালা প্রণয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তবে তিনি একইসঙ্গে মনে করেন, যৌক্তিকতার ভিত্তিতে তা প্রণয়নের পথে এগোতে হবে।
তৌফিক খালিদী বলেন, “যে কেউ একটি সংবাদ মাধ্যমের (টেলিভিশন চ্যানেল, সংবাদপত্র ইত্যাদি) মালিক হয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। সেই সঙ্গে মোবাইল ফোনে যে কেউ সংবাদ সেবা দেবে, এটাও হতে পারে না। কোনো নিয়ামকের ভিত্তিতে এটা করতে হবে। এ জন্য একটি নীতিমালা প্রয়োজন।”
“১০০টি টেলিভিশন চ্যানেলও হতে পারে, তবে সবাইকেই যে খবর প্রচার করতে হবে, তার কোনো মানে নেই। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকদেরই এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে,” বলেন তিনি।
বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবনে রাজনীতিবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রধান সম্পাদক বলেন, “সংবাদ মাধ্যম যদি এ রকম লাগামহীন হয়, তবে তার জন্য রাজনীতিবিদদেরই যে বেশি ভুগতে হয়, তা আপনারা (রাজনীতিক) অভিজ্ঞতা দিয়েই বুঝতে পারবেন।”
মুক্ত মত প্রকাশের প্রসঙ্গ ধরে ব্লগিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি সবিনয়ে বলতে চাই, মত প্রকাশের নামে যা ইচ্ছা তাই প্রকাশের আমি বিরোধিতা করি। মত প্রকাশ করতে হবে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে।”
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণেই এর প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন তৌফিক খালিদী।
এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, সংবাদের মতো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর ব্লগে মত প্রকাশের ক্ষেত্রেও সম্পাদকীয় যাচাই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে এগোনো হয়। আর তা করা হয় ব্লগে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বাধীনতাটুকু ব্যাহত না করেই।
মত প্রকাশের স্বাধীনতার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারসাম্য যেন থাকে, তার ওপরই জোর দিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রধান সম্পাদক। তবে তিনি একইসঙ্গে নিয়মের বেড়াজাল আবার যেন মত প্রকাশের অধিকার ক্ষুন্ন না করে, সে বিষয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
“আমি এখানে বলতে চাই, পুরোপুরি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের যে কথাটি বিভিন্ন ব্লগাররা বলতে চান, তার সঙ্গে আমার ভিন্নমত রয়েছে। মত প্রকাশের সম্পূর্ণ স্বাধীনতার স্বপ্ন একটি বিভ্রম এবং কোনো সমাজেই যে এর নজির নেই, অনেকের এই ভাবনার সঙ্গে আমিও একমত পোষণ করি,” বলেন তিনি।
তবে একইসঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, নিয়মনীতি ছাড়া সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশন চ্যানেল খোলার অনুমতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম জগতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সাংবাদিক তৌফিক খালিদী ইন্টারনেট জনগণের আরো কাছে পৌঁছানোর পাশাপাশি এর গতি আরো দ্রুত করতেও সরকারের মনোযোগ চেয়েছেন।
তিনি বলেন, “ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমের অফুরান সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে শুধু লেখাই নয়, অডিও-ভিডিও সব মিলিয়ে এখন তা এখন হয়ে উঠেছে সবকিছুরই সম্মিলন।”
এই প্রসঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সংবাদে অডিও ও ভিডিও সংযোজনের বিষয়টি তুলে ধরেন তৌফিক খালিদী।
ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো এবং তা আরো সুলভ করার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, তাহলে দেশে শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি অনেক সহজ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুসারে, দেশে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে ২ কোটি।
“এর এক-দশমাংশের কাছেও যদি আমরা পৌঁছাই, তা-ও দেশের সব সংবাদপত্রের মোট প্রচার সংখ্যার সমান। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ছোট-বড় ৪০০টি দৈনিকের সম্মিলিত প্রচার সংখ্যা ২০ লাখ,” বলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রধান সম্পাদক।
দেশের সংবাদ জগতে অনেক ‘নতুন’ উপহার দেওয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর পক্ষ থেকে আরো ‘নতুন’ কিছু দেওয়ার অঙ্গীকারও বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে করেন তৌফিক খালিদী।
মোবাইল ফোনে সংবাদ দেওয়ার বিষয়টি প্রথম চালুর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা প্রতি মুহূর্তেই পাচ্ছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর সংবাদ।
গ্রামীণফোনের মাধ্যমে শুধু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংবাদ শোনাই যাচ্ছে না, বড় খবরের ক্ষেত্রে ‘ব্রেকিং নিউজ’ সার্ভিসে ইংরেজি এসএমএসের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে তাৎক্ষণিক খবর। এছাড়া প্রতিদিন সকালে (ব্রেকফাস্ট নিউজ), দুপুরে (মিড ডে আপডেট) এবং সন্ধ্যায় (ইভনিং আপডেট) এসএমসের মাধ্যমে পাওয়া যায় তাজা খবর। এছাড়া প্রতিদিন সকালে ব্যবসা-বাণিজ্যের খবর নিয়ে রয়েছে ‘বিজনেস আপডেট’। আর সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম নিয়ে দিনরাত রয়েছে ‘পুশ-পুল নিউজ এসএমএস’।
“আমাদের সংবাদ সেবা নেন গ্রামীণফোনের ১ লাখ ২০ হাজার নিবন্ধিত গ্রাহক, যা দেশের সব ইংরেজি দৈনিকের প্রচার সংখ্যার চেয়ে বেশি,” বলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক।
দেশে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়েবসাইট চালুর অগ্রদূতও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছার চেষ্টায় কম মূল্যের মোবাইল সেট ব্যবহারকারীদের জন্য প্রথম বাংলা ওয়্যাপ সাইট নির্মাণও এই প্রতিষ্ঠানেরই।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর কাজের ধরন ও চিত্র তুলে ধরে তৌফিক খালিদী বলেন, “দেশে একটি সংবাদকক্ষের ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকার চর্চা শুরু করেছিলাম আমরাই। এখন তা অনুসরণ করছে টেলিভিশন চ্যানেলের পাশাপাশি কয়েকটি সংবাদপত্রও। গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পুরোপুরি আসার আগে পাঠককে স্ক্রলের মাধ্যমে জানানোর নতুন দিকটির সঙ্গে বাংলাদেশিদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম আমরাই, যা এখন বহুল ব্যবহৃত।”
বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি কোনো ঘটনাকে সংবাদ হিসেবে তুলে আনার ক্ষেত্রে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর ভূমিকাও তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।
এক্ষেত্রে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক তুলে ধরেন বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফারজানা ইয়াসমিনের কথা, যৌতুক চাওয়ায় যিনি বিয়ের আসরেই তালাক দিয়েছিলেন বরকে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর নিউজ পোর্টাল এখন সামাজিক যোগাযোগের সক্রিয়তম বাংলাদেশি নিউজ সাইট। ফেইসবুকে এর পেইজে ফ্যান সংখ্যা ৭৬ হাজার ২৫৭। টুইটারের পাতাতেও উপস্থিত সর্বক্ষণ। ফেইসবুকে গড়ে প্রতিদিন ১০ হাজার সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এই পেইজে থাকেন।
সব বয়সী, সব রুচির পাঠকের জন্যই আলাদা আলাদা ক্ষেত্র তৈরির বিষয়টিও তুলে ধরেন তৌফিক খালিদী।
প্রযুক্তিবান্ধব সুস্থ বিনোদনে শিশুদের আগ্রহ তৈরিতে চার বছর আগে যাত্রা শুরু করা ‘কিডজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’ শিশুদের জন্য বাংলা ভাষায় বিশ্বের প্রথম ওয়েবসাইট।
এ সাইট শিশুদের আনন্দের খোরাক যেমন যোগাচ্ছে, তেমনি ক্রীড়ামোদী, প্রযুক্তি অনুসন্ধিৎসু, সাহিত্যপ্রিয় পাঠকের রুচি বিবেচনায় রেখে তৈরি করেছে আলাদা আলাদা সাইট।
দুর্লভ ধ্র“পদী সাহিত্য সৃষ্টিকে ই-বুকে রূপান্তরের বিপুল কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের হারিয়ে যাওয়া সম্ভার তুলে ধরা হয়েছে আর্টস সাইটে। পাতা উল্টে সাময়িকী পড়ার চিরায়ত স্বাদ নতুন করে ফিরিয়ে এনে তৈরি করা হয়েছে ভি-ম্যাগ বা ভার্চুয়াল ম্যাগাজিন, এটিও বাংলা ভাষায় প্রথম।
সাহিত্য জগতের অনেকের প্রযুক্তিভীতির কথা অনেকে বললেও ‘আর্টস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’ এর রয়েছে কবি-সাহিত্যিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমই বাংলাদেশে নাগরিক সাংবাদিকতার প্রথম মঞ্চ। মতপ্রকাশে উন্মুক্ত, তবে বৈরিতা, বিদ্বেষ ও মানহানিকর মন্তব্য সম্পাদকীয় বিবেচনার জন্য রেখে দায়িত্বশীলতার পরিচয়ও দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অবাধ মতপ্রবাহ সুরক্ষার নামে সবকিছুই প্রকাশ করার তথাকথিত জনপ্রিয় ধারার বিপরীতে শক্ত সম্পাদকীয় অবস্থান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর। (কিছু সংশোধনসহ)