প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের নিরাপত্তা দলের সদস্য মেজর মোহাম্মদ রাসেল আজাদ ভূঁইয়া নামে ওই কর্মকর্তার বাবা আবুল কালাম আজাদ সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলের নামে এসব কী রটছে? বিশ্বাস করেন, আমরা খুব সাধারণ মানুষ, কোনো রাজনীতির মধ্যে নাই।
“প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যে খবর রটেছে তা বিশাল ব্যাপার। এর সঙ্গে আমার ছেলেকে জড়িয়ে যে সব রটানো হচ্ছে, আমাদের তো হার্ট ফেল করার দশা!”
শুক্রবার ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিকের তৈরি করা একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গত ২৪ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ভণ্ডুল করা হয়েছে। মিয়ানমারের মিজিমা ডটকমে প্রকাশিত খবরটি শনিবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস, ইত্তেফাকসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম প্রচার করে। ভারতীয় একটি টেলিভিশন স্টেশনও সম্প্রচার করে খবরটি।
পরদিন রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় খবরটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নাকচ করে দেয়।
এ নিয়ে সোমবার সুবীর ভৌমিক এক ফেইসবুক পোস্টে ওই প্রতিবেদন সত্য দাবি করে কথিত সেদিনের ঘটনায় কয়েকজন নিহত হয়েছে বলে লিখেছেন। নিহতদের একজনের পরিচয় ক্যাপ্টেন রাসেল দাবি করে পর্যায়ক্রমে নিহত আরও এসএসএফ সদস্যের পরিচয় প্রকাশ করবেন বলে পোস্টে লেখেন তিনি।
তবে এসএসএফের একজন সদস্য, মোহাম্মদ রাসেল আজাদ ভূঁইয়ার গ্রামের বাড়ি ভোলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাড়িতে। তিনি ক্যাপ্টেন নন, মেজর। তার বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ।
সাত-আট বছর আগে ভূঁইয়া বাড়ি মেঘনার ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। তিনি বর্তমানে পরিবার নিয়ে ঢাকার ফার্মগেইট এলাকায় বসবাস করেন।
ভোলা সদরের পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহরাওয়ার্দী সোমবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আবুল কালাম আজাদ চার মাস আগে এলাকায় এসেছিলেন। তখন তিনি তাকে জানান তার ছেলে রাসেল সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন থেকে মেজর হয়েছে।
বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ এলাকায় এলে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। মেজর রাসেলের মামা স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ সোমবার সন্ধ্যার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাসেল তার দায়িত্বের অংশ হিসেবেই দেশের বাইরে আছেন।
সারা দিন বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ও সাংবাদিকদের ফোনে তিনি অতিষ্ঠ। কী কারণে সবাই তার ভাগ্নে রাসেল ও ভগ্নিপতি আবুল কালাম আজাদের তথ্য খুঁজছে তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না।
এরপর সবুজের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে রাসেলের বাবা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কয়েক দফা মোবাইলে কথা হয়।
তিনি বলেন, তার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের জন্য ‘অগ্রবর্তী দলের অংশ হিসেবে’ বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছে।
“আমার ছেলেও সেখান থেকে ফোনে কান্নাকাটি করছে। ভিত্তিহীন এই খবরের কারণে আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।”
ওয়াশিংটন থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর রওনা দিয়ে লন্ডন হয়ে ২ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
রাসেলের বিদেশের নম্বর চাইলে সময় নেন আবুল কালাম আজাদ। পরে জানান, অফিশিয়ালি কিছু হয়নি বলে তিনি কথা বলতে চাচ্ছেন না।