এই দুজন হলেন হাদীসুর রহমান সাগর ও রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ। এই হামলার জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন যাদের চিহ্নিত করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, তাদের মধ্যে এই দুজনই এখন পলাতক।
হলি আর্টিজেনে হামলায় এদের কী ভূমিকা ছিল- জানতে চাইলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাশেদ বা র্যাশ নব্য জেএমবির প্রধান তামিমের খুব কাছের লোক, আর সাগর যশোর থেকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল।”
এ মাসের শুরুতে গুলশান হামলার প্রথম বার্ষিকীতে আলোচিত এই মামলাটির অভিযোগপত্র না দিতে পারার জন্য পলাতক পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে না পারাকে কারণ দেখিয়েছিলেন মনিরুল।
তখন পর্যন্ত পলাতকের খাতায় নাম ছিল- সোহেল মাহফুজ, রাশেদুল ইসলাম র্যাশ, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট, মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান ও হাদীসুর রহমান।
এর মধ্যে সোহেল, র্যাশ ও বাশারুজ্জামানকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেখিয়ে মনিরুল বলেছিলেন, “তাদের পেলে হয়ত আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাব।”
এরপর গত ৮ জুলাই সোহেল মাহফুজকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানতে পারে, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল শিবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত চারজনের মধ্যে বাশারুজ্জামান ও ছোট মিজানও রয়েছেন।
মনিরুল বলেন, শিবগঞ্জের মোবারকপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামে অভিযানে চার জঙ্গি আত্মঘাতী হয়ে মারা গিয়েছিলেন। তখন তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সোহেল বলছেন, এদের মধ্যে বাশার ও ছোট মিজান রয়েছে।
“মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে যে এদের মধ্যে বাশার ও মিজান আছে। বাশারের ছবির দাড়ি কেটে যে রূপ পাওয়া যায়, সে রকম চেহারা নিহতদের মধ্যে ছিল।”
পুরোপুরি নিশ্চিত হতে তাদের দেহ থেকে রাখা নমুনার সঙ্গে তাদের স্বজনদের ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনজনের অবস্থা চিহ্ণিত হওয়ার পর তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে দাবি করে মনিরুল বলেন, “তদন্ত শেষ পর্যায়ে, সুতরাং শিগগিরই (অভিযোগপত্র) দেওয়া হবে।”
২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ের ওই হামলায় জড়িত থাকায় অভিযোগে এই পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, সোহেল মাহফুজ এবং সেই রাতে পরিবার সদস্যদের নিয়ে হলি আর্টিজানে আটকে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিম।
নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরীর পাশাপাশি জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, আব্দুল্লাহ মোতালেব ও ফরিদুল ইসলাম আকাশ গুলশানের হামলায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য, এরা সবাই পরে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন।
হলি আর্টিজানে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল তখনই কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছিলেন।