রোজার প্রতিদিন দুপুর থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত ক্রেতাবিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত থাকে ঐতিহ্যবাহী চকবাজার। প্রতিবারের মতো এবারও রোজার প্রথম দিনটিতেই মুখরিত চকবাজার।
ছোলা, মুড়ি, জিলাপী, পেঁয়াজু, আলুরচপ, ডিমচপ, বেগুনি, পাকোড়া, হালিম, দই, পায়েসসহ নানা ফল তো রয়েছেই। সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ খাবারটি নিয়ে বাড়তি আকর্ষণ।
দুপুরের পর থেকে এখানে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের আনাগোনা। চকবাজারের ইফতারের স্বাদ নিতে আসেন সব বয়সী মানুষ। কেউ এসেছেন প্রথম আবার, কেউবা প্রতিবছর আসেন।
প্রতিবছর চকবাজারের ইফাতার পণ্যে নতুনত্ব না থাকলেও অনেকেই আসেন নিয়ম করে। অনেকের আবার চকবাজারের ইফতার ছাড়া মুখে অন্যকিছু রোচে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক নারী এসেছেন, সঙ্গে ১০ ও ১২ বছর বয়সী দুই সন্তানকে নিয়ে। কথা বলে জানা গেল, এবারই প্রথম এসেছেন চকবাজারে।
গাদাগাদি ভিড়ের মধ্যেই দাঁড়িয়েই ৪৫ বছর বয়সী সুমি আক্তার বলেন, “এই বাজারের ইফতারের সুনামের কারণে একটা দুর্বলতা ছিল, কিন্তু আসার সুযোগ হলো এবারই।”
কী কিনেছেন জানতে চাইলে বলেন, “শাহী জিলাপী, দইবড়া আর আস্ত হাঁসের রোস্ট কিনেছি। আর ‘বড়বাপের পোলা খায়’-এই জিনিসটা কী তা বোঝার জন্য আধা কেজি কিনেছি।”
অদ্ভুত নামের খাবারটি দেখে বিস্মিত সুমি বলেন, “ভেবেছিলাম ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ না জানি কী এমন খাবার। কিন্তু এখন দেখছি বুটের ডাল আর চিঁড়ার সঙ্গে মাংস মাখিয়ে বিক্রি করছে।”
তবে দোকানদার সেন্টু মিয়া জানালেন, প্রায় ৩৫টি পদের মিশ্রণে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু খাবার।
মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী শাহিন আহমেদ জানান, তিনি প্রতিবছর চকবাজারে ইফতার কিনতে আসেন। তিনি সাধারণত দইবড়া, ছোলা, ডিম চপ, জুতি ও জালি কাবাব- এই খাবারগুলোই কিনে থাকেন।
তবে গতবারের তুলনায় এবার ইফতার পণ্যের দাম বেশি বলে জানান কয়েকজন ক্রেতা।
বেশি দাম রাখায় বিরক্ত এক বৃদ্ধ বলেন, “সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে দোকানদাররা। গত বছর ‘বড়বাপের পোলায় খায়’ সাড়ে ৩০০ টাকায় কিনেছি কিন্তু এবছর সাড়ে ৪০০ টাকা দাম চাচ্ছে। আর খাসির মাংসের রোস্ট করা রানের দাম ছিল তিন থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা কিন্তু এ বছর দাম ৪০০ টাকা।”
তবে দোকানদাররা বললেন, রোস্টের দাম নির্ভর করে আকৃতির ওপর। একটি আস্ত মুরগির রোস্ট দুইশ বিশ টাকায়ও পাওয়া যাবে আবার তিনশ টাকায়ও পাওয়া যাবে।”