সাংবাদিকদের দেশবিরোধী কাজে নজরদারির সুপারিশ

কোনো সাংবাদিক বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কাজে লিপ্ত আছে কিনা সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2017, 01:18 PM
Updated : 27 April 2017, 01:18 PM

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা শেষে এ সুপারিশ করা হয়। গত ৩০ মার্চ কমিটির ১২তম বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন কমিটির সদস্য মাহজাবিন খালেদ।

কমিটির কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে; বৃহস্পতিবার কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া ওই কার্যবিবরণীর একটি অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে রয়েছে।

ওই আলোচনার শেষে কমিটির সভাপতি দীপু মনি বলেন, “সাংবাদিকদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি করা যায় না। তবে কোনো সাংবাদিক বিদেশে গিয়ে দেশবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হয় কিনা, সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখা বা নজরদারি করা বাঞ্চনীয়।”

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দীপু মনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন জানিয়ে পরে ফোন করতে বলেন। তবে এরপরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কমিটির আলোচ্যসূচিতে থাকা ওই বিষয়ে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মাহজাবিন বলেন, “গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তান হাই কমিশন কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি সাংবাদিককে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানায়। এসকল সাংবাদিক বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাৎ করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। গণমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কথাবার্তাসহ গণহত্যা বিষয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কে অবহিত কিনা তাও বৈঠকে জানতে চান মাহজাবিন।

ঢাকার পাকিস্তান হাই কমিশন সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীদের তাদের দেশ সফরে নিয়ে যায়।

ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “দুই বছর আগে পাকিস্তানপন্থি কিছু সংখ্যক সাংবাদিকদের তাদের (পাকিস্তান) পক্ষে কাজ করার জন্য পাকিস্তান চিহ্নিত করে। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কিছু সাংবাদিককেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে লক্ষ্য করা যায়।”

কার্যবিবরণীতে বলা হয়, প্রতিমন্ত্রীর মতে বিষয়টি দেশের জন্য ভালো এবং তিনি আশা করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব সাংবাদিকরা নিশ্চয়ই দেশের পক্ষে কথা বলবেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবহিত রয়েছেন এবং এসকল সাংবাদিক পাকিস্তান যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছেন।

সচিব জানান, পাকিস্তান সফরে যাওয়া সাংবাদিকরা ১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য দেশটিকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে এবং যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিতে পারেননি বলেও উল্লেখ করে সচিব।

আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “পাকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বাংলাদেশবিরোধী আলোচনার খোঁজখবর রাখছেন।”

এ বিষয়ে আলোচনার পর কমিটিতে সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়।

সুপারিশের বিষয়ে কার্যবিবরণীতে বলা হয়, “বাংলাদেশ থেকে কোনো সাংবাদিক বিদেশ গিয়ে দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে কিনা, সে সম্পর্কে যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।”