গণহত্যা দিবসে বঙ্গভবনে বৃক্ষরোপণ

জাতীয় গণহত্যা দিবসে ‘শহীদস্মৃতি বৃক্ষরোপণ’ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2017, 10:41 AM
Updated : 25 March 2017, 10:41 AM

শনিবার বঙ্গভবনের মাঠে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চের কালরাতের স্মরণে ২৫টি গাছের চারা রোপণ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতি ‘চিরসবুজ’ রাখতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ৩০ লাখ গাছ লাগানোর এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

জাতীয় সংসদে স্বীকৃতির পর এবারই প্রথম ২৫ মার্চ জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করছে বাংলাদেশ। 

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে এ দেশের নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছিল তা বিশ্বে বিরল। এ গণহত্যাকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে এবং এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এই উদ্যোগ অনন্য ও অসাধারণ।

 “দেরিতে হলেও জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ জন্য আমি মাননীয় সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সব সংসদ সদস্যের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

রাষ্ট্রপতি বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশে ৩০ লক্ষ নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। বাঙালির হৃদয়ের সে কান্না কোন দিন বন্ধ হবে না।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গণহত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং বিচারের রায় কার্যকর করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারসহ গোটা জাতির দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করেছেন।”

‘শহীদস্মৃতি বৃক্ষরোপণ’ কর্মসূচির প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, শহীদদের স্মরণ করার পাশাপাশি গণহত্যাকে নিরুৎসাহিত করতে এ উদ্যোগ দেশ-বিদেশে জনমত ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করবে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান আবদুল হামিদ।

নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হেলাল মোর্শেদ খান, ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলাও বক্তব্য দেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি ও অন্য অতিথিরা বঙ্গভবনের উত্তর-পশ্চিম কোনে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ২৫ জন শহীদের স্মরণে ২৫টি গাছের চারা লাগান।

গত ১১ মার্চ সংসদে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরে মন্ত্রিসভা দিবসটি পালনের নির্বাহী সিদ্ধান্ত নেয়। দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য এরই মধ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে।

বাঙালির মুক্তির আন্দোলন দমাতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের ওই অভিযানে ঢাকায় নারকীয় গণহত্যা চালানো হয় ।

 এরপর নয় মাসের যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং জাতির অসাধারণ ত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।