কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আগুন রহস্যজনক: বিএনপি

রিজার্ভ চুরির একবছর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আগুন লাগার ঘটনা ‘রহস্যজনক’ বলে মনে করছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2017, 12:03 PM
Updated : 24 March 2017, 01:35 PM

রাজধানীতে শুক্রবার দুপুরে আলাদা দুটি আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আগুনের এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

মঈন খান বলেন, “৩২ তলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৩/১৪ তলায় বৈদেশিক বিভাগ। এর আগে ছুটির দিনে এই ব্যাংকের রিজার্ভ শাখা থেকে অর্থ লোপাট হয়েছিল। এবার যে আগুনের ঘটনাটি ঘটেছে তাও ছুটির দিনেই হয়েছে। এ দুটি ঘটনাই ছুটির দিনে ঘটল- এটা রহস্যজনক।”

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আজ বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন লেগেছে, প্রশ্নটা ওঠা স্বাভাবিক- এর কারণ কী? আমি জানি না এর কারণ। এটাই জনমনে প্রশ্ন- কেন এই আগুন?”

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২৮ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪ তলার একটি কক্ষে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১০টা ৩৪ মিনিটে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবনের ১৪ তলার ওই অংশে বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের কার্যক্রম চলে। আগুনে ওই বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের ঘর ও আসবাবপত্র পুড়ে যাওয়ার কথা জানা গেলেও ক্ষয়ক্ষতির স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়নি।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি যায় সুইফট মেসেজ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে। ওই অর্থ ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকে যাওয়ার পর দেড় কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেলেও বাকি টাকা উদ্ধারের কোনো আশা এখনও পাওয়া যায়নি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ কৃষক দলের আলোচনা সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী রিজার্ভ চুরির পর সেই তথ্য চেপে রাখার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, “ওই রিজার্ভ চুরি হওয়ার পর দুই মাসেও ঘটনাটি কেউ জানাল না। দুই মাস পর সেটা এলো ফিলিপিন্সের একটি নিউজপেপার থেকে।”

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকও বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতর থেকে কাজটা (হ্যাকিং) হয়েছে। যে কারণে তদন্ত রিপোর্ট দিচ্ছে না। শুধুমাত্র গভর্নরের চাকরি খেয়ে এতো বড় ঘটনা চাপা দিতে চাইছে।

‘‘একইভাবে শেয়ার বাজারের অর্থ লোপাট হলো, কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তির বিরোধিতা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ আলোচনা সভায় বলেন, “ভারত আধিপত্যবাদী আগ্রাসী শক্তি। তাদের সঙ্গে যদি চুক্তি করা হয় সেটা হবে স্বাধীনতা বিপন্ন করার চুক্তি, ক্রীতদাস হওয়ার চুক্তি। একটি স্বাধীন দেশের সঙ্গে অপর একটি স্বাধীন দেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি হবে না।”

কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী ও কৃষক দলের সহ-সভাপতি এম এ তাহের বক্তব্য দেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভায় মইন খানও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তির খবর নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, “পত্র-পত্রিকায় দেখলাম প্রতিরক্ষা চুক্তি ভারত চাইছে, অন্য কেউ চাইছে না। আমাদের চারদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত। অন্য কোনো দেশ নেই। তাহলে কেন এই চুক্তি, কার স্বার্থে এই চুক্তি- এটা আজ মানুষের কাছে আমাদের প্রশ্ন।”