পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধে ‘ষড়যন্ত্র করায়’ দেশবাসী মুহাম্মদ ইউনূসের ‘বিচার করবে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 09 Mar 2017, 04:23 PM
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, তার পরিবারের সদস্যদেরও ওই ষড়যন্ত্রে ‘জড়ানোর খুব চেষ্টা’ করা হয়েছিল।
“আমার বোন, আমার ছেলে, মেয়ে, প্রত্যেককে... যে অত্যাচার আমাদের ওপর দিয়ে গেছে... মানসিকভাবে, সেটা আমি আপনাদের ভাষায় বর্ণনা করতে পারব না।
“শুধু এটা ব্যাংকের এমডি পদের জন্য একটা দেশের এতবড় সর্বনাশ যে করতে পারে... আমি জানি না, সে বিচার দেশবাসী করবে।”
দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয় বিশ্ব ব্যাংক।
তারপর থেকে প্রধানমন্ত্রী বলে আসছেন, ইউনূসের জন্য ‘সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের লবিংয়ে’ বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়।
এর আগে ২০১১ সালে বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ থেকে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েও হেরে যান তিনি।
দীর্ঘ টানাপড়েনের এক পর্যায়ে বিশ্ব ব্যাংককে ‘না’ করে দিয়ে নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার। আর সম্প্রতি কানাডার একটি আদালতের রায়ে ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার কথা প্রকাশের পর নতুন করে আলোচনায় আসেন ইউনূস।
বাংলাদেশে পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি সুফল পাবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা জলবায়ুর পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্স্ত হবার কথা... তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যে এটা কত প্রয়োজন... সেই সেতুর কাজ পর্যন্ত বন্ধ করাল!
“ওই ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকা বন্ধ করে দিল মিথ্যা একটা অভিযোগ দিয়ে। সেখানে নাকি দুর্নীতি হয়েছে। আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছিলাম।”
শেখ হাসিনা বলেন, “তারা অনেক প্রলোভন দিয়েছিল... এটা করলে টাকা দেবে, ওটা করলে টাকা দেবে। তখন বললাম, ওই মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে ওই টাকা নেব না। যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা প্রমাণ করতে না পারবা। সেটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল, সেখানে আমরা জয়ী হয়েছি।”
পদ্মা সেতু নিয়ে কানাডার আদালতের সাম্প্রতিক রায়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের সব অভিযোগ যে ‘ভুয়া, বানোয়াট’ তা ওই রায়েই প্রমাণ হয়েছে।
“আমি এটুকু বলতে পারি যে, যেহেতু সততার সাথে রাষ্ট্র চালাচ্ছি, এতোটুকু খুঁত কারও পায়নি... আমি জাতির পিতার কন্যা হিসাবে অন্তত এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশের জনগণের মান-মর্যাদা আমাদের জন্য বা আমাদের পরিবারের কারও জন্য ক্ষুণ্ন হবে না।”
জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে ঢাকার ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।