বৃহস্পতিবার শহীদ এম মনসুর আলীর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
আবদুল হামিদ বলেন, “রাজনীতিতে চড়াই-উৎরাই আছে এবং থাকবে। আর এর মধ্য দিয়েই একজন রাজনীতিবিদকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়। নীতি ও আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমেই একজন রাজনীতিবিদ সাফল্যের পথে এগিয়ে যায়। লক্ষ্যহীন তরী যেমন কখনও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না, তেমনি আদর্শহীন রাজনীতিও দেশ ও মানুষের কল্যাণে আসেনা।
“আমি রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা ব্যক্তি ও দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিন। জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিন। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। রাজনীতিতে নীতি-আদর্শের চেয়ে অর্থবিত্ত ও পদ-পদবীর গুরুত্ব বেশী হলে তা রাজনীতিকে কলুষিত করে। গণতন্ত্রের চর্চাকে ব্যাহত করে।”
এম মনসুর আলীর জীভনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, “ক্ষমতার কাছে থেকেও তিনি ছিলেন নির্মোহ ও নির্লোভ। তিনি ইচ্ছা করলে আরাম-আয়েশে জীবন যাপন করতে পারতেন, বিত্ত-বৈভবের মালিক হতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি গণমানুষের জন্য কাজ করেছেন।
“রাজনীতির মূলমন্ত্র হচ্ছে ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়। শহীদ এম মনসুর আলী এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করেই রাজনীতি করেছেন। আর এ কারণেই ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর নিজের জীবন দিয়েছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির সাথে বেঈমানী করেননি।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চারনেতার হত্যার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর ঘাতকচক্র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে নানামুখী চক্রান্ত শুরু করে। কিন্তু এ দেশের স্বাধীনতা প্রিয় মানুষ তা হতে দেয়নি।
“ভবিষ্যতেও যাতে কোনো কুচক্রী মহল তা করতে না পারে সেলক্ষ্যে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। তা হলে তারা জানতে পারবে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে জাতির পিতার গৌরবদীপ্ত অবদান। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু বাংলা, বাঙালি, বাংলাদেশের কথা ভোলেননি।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফয়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু প্রমুখ।