ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে দল বেঁধে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও তাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো গাফিলতি দেখছেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
Published : 03 Nov 2016, 03:12 PM
গত ৩০ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসির উপস্থিতিতে সমাবেশে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যের পর ওই হামলা হয়েছিল। এতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
অভিযোগের মুখে ওসি আব্দুল কাদেরকে নাসিরনগর থেকে সরিয়ে আনলেও তারও বড় ধরনের ব্যর্থতা ছিল না বলেই মনে করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ঠেকাতে পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “আমরা দেখেছি, আমাদের কোনো গ্যাপ ছিল না।
“তারও (ওসি) কোনো গ্যাপ ছিল না। তারপরও আমরা মনে করেছি সে (ওসি) আরেকটু তৎপর হতে পারতো। সেজন্য আমরা তাকে প্রত্যাহার করেছি।”
ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের যে সমাবেশের পর হামলা হয়েছিল, তাতে ওসি কাদের ও ইউএনও চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমেদও বক্তব্যত রাখেন।
মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার খবর শুনে র্যাযব গেলেও বাহিনীর কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন বলেছিলেন, তার বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হওয়ার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এই ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গঠন করা তদন্ত দল বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগরে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত দলের নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শাখাওয়াত হোসেন।
জেলা পুলিশ, পুলিশ সদর দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোট তিনটি কমিটি কাজ করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে, আপনারা (সাংবাদিক) সবকিছু জানেন, কেন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে এবং কী কী ঘটনা ঘটেছে।
“আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার নিজস্ব টিম পাঠিয়েছেন এবং ‘অ্যাসেস’ করেছেন কোথায় কার মাধ্যমে এগুলো সংঘটিত হয়েছে, কে কে এবং কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।”
এই ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার প্রত্যেকটিতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে।
গত ২৮ অক্টোবর নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসের ফেইসবুক পাতায় একটি পোস্ট নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান।
ফেইসবুকে রসরাজ ‘ইসলাম অবমাননা করে’ পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ তাকে শনিবার আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনা নিয়ে রোববার বিক্ষোভ সমাবেশের পর হামলার ঘটনা ঘটে।